মে ১৬, ২০২৩, ০৮:৩৪ পিএম
চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুর পর কয়েকটি ভিত্তিহীন অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে যেগুলোর মধ্যে একটি ছিলো তিনি নাকি ইসলামকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এমনই একটি কথা সোমবার সকালে নায়কের মৃত্যুর পর থেকে ছড়াতে থাকে। কিন্তু আসলেই কি ফারুক এমন কোনো কটাক্ষপূর্ণ কথা বলেছিলেন? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একটি মিম থেকেই বাক্যটি ছড়ায়। কিন্তু কোথাও এর সঠিক সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রয়াত নায়কের পরিবারও জানায়, ব্যাংক ঋণ কিংবা ইসলাম নিয়ে কটাক্ষের কথিত সংবাদ দিয়ে একটি মহল নোংরা রাজনীতি করেছে। ফারুক সেই নোংরা রাজনীতিরই শিকার হয়েছিলেন।
ফারুককে ধর্মবিরোধী বানানোর চেষ্টা শুধু এখন নয়, তাঁকে আক্রমন করা হয়েছিল সেই ২০১৮ সালেও। ওই বছরের নভেম্বরে ফারুক রাজধানীর এফডিসির চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হয়েছিলেন।
ফারুক তখন জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিবারের সকলেই হাজি। তিনি একটি মসজিদের মোতওয়াল্লি। ইসলামবিরোধী কোনো কথাও তিনি কোনোদিন বলেননি। আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন সাক্ষী।
ফারুক সেদিন আরও বলেছিলেন, ধর্মকে আঘাত করতে পারে, এমন কোনো কথাই আমি বলিনি। আমি যদি বলে থাকি ওপরের রাব্বুল আল আমিন সাক্ষী আছেন। বিশ্বাস করুন, আমি এ দেশের মাটিকে ভালোবাসি। আমি সব ধরনের মানুষকে ভালোবাসি। কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে খ্রিস্টান, কে বুদ্ধিস্ট আমি এগুলো ফিল করি না। কারণ আমি একজন মানুষ। আজ দুঃখ নিয়ে কয়েকটা কথা বলতে চাই। সারা জীবন মানুষের কথা বলেছি। আমাকে নিয়ে ফেসবুকে যেসব কথাবার্তা বলা হয়, আমি আসলেই মর্মাহত। মানুষ এত নিচে নামতে পারে, আমি ভাবতেও পারিনি।
ফেসবুকে সমালোচনার বিষয় নিয়ে ফারুক তখন আরও বলেছিলেন, ইসলাম নিয়ে আমি কেন কথা বলবো? আমি কে জানেন? আমি হাজি, আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। আমার স্ত্রী ফারহানা সে-ও হাজি। আমার মেয়ে ফারিহা তাবাসসুম হাজি। আমার ছেলে রওশন হোসেন পাঠান হাজি।
ফারুক একটি মসজিদের মোতওয়াল্লি উল্লেখ করে সেদিন আরও বলেছিলেন, একটি মসজিদ আছে। আমার নিজের বড় দাদা দিয়ে গেছেন। মসজিদের জমি কত জানেন? ৩০ বিঘা। শুধু মসজিদটি ৫ বিঘা জমিজুড়ে রয়েছে। ওই মসজিদের মোতওয়াল্লি ভাই আমি। আমি একজন মুসলিম ঘারানার। যেটাকে বলা হয় রিয়েল সেন্সর, ধর্ম যার যার। ধর্মকে নিয়ে কথা বলার অধিকার কারো নেই।
মুক্তিযুদ্ধ ও মিথ্যা ছড়ানো প্রসঙ্গ এই নায়ক বলেছিলেন, আমরা যুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করার জন্য। পরাধীনতার শিকল গলায় দিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেটাকে ভেঙেচুরে ৩০ লক্ষ মানুষের বুকের রক্ত দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশটাকে স্বাধীন করা হয়েছিল ভাই। এই ভুল তথ্য দিয়ে কাউকে হেয়, ছোট করার চেষ্টা করবেন না ভাই। আপনাদের কাছে আমি অনুরোধ জানাই। এতে আপনারা কোনো ফল পাবেন না। সমস্ত কিছু নির্ভর করে সত্য ও সুন্দরের ওপরে।