দুবাইয়ের কথিত জুয়েলারি ব্যবসায়ী পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে তাঁকে ফেরানো অনেক সময়ের ব্যাপার বলেও মনে করছেন তারা।
পুলিশের এসবির পরিদর্শক মামুন এমরান খান ২০১৮ সালের ৭ জুলাই বনানীতে একটি অফিসের পার্টিতে গিয়ে নিহত হন। তাকে হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে গাজীপুরের কালীগঞ্জে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এরপর ভারতে পালিয়ে যান রবিউল। বাবা-মা তাঁর নাম দিয়েছিলেন সোহাগ মোল্লা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের একটি পল্লীতে গিয়ে বাসা ভাড়া নেন রবিউল। বাসার মালিককে বাবা ও তার স্ত্রীকে মা ডাকতেন। তাদের নাম পরিচয় ব্যবহার করে ভারতের পাসপোর্টও বানান রবিউল। ২০২০ সালে আরাভ খান নামে ভুয়া নাম-পরিচয়ে ওই পাসপোর্ট তৈরি করে দুবাইয়ে পাড়ি জমান।
দুবাইয়ের হিন্দ প্লাজায় আরাভ জুয়েলার্স নামে স্বর্ণের দোকানের মালিক আরাভ খান। দোকান উদ্বোধন করতে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ শোবিজ জগতের অনেককে দুবাইয়ে নিয়ে যান তিনি। এরপরই তাঁর বিষয়টি সামনে আসে, শুরু হয় আলোচনা। ডিবির ভাষ্য– আরাভ যে হত্যা মামলার পলাতক আসামি, তা আগেই সাকিব আল হাসানকে অবহিত করা হয়েছিল। এরপরও তিনি আরাভের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ছুটে যান দুবাইয়ে। একজন হত্যা মামলার আসামির ডাকে সাকিবসহ শোবিজের অনেকেই অংশ নেওয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে দরিদ্র পরিবারের সন্তান আরাভ মাত্র ৩-৪ বছরে কীভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক হলেন, তাঁর টাকার উৎস কী– এসব প্রশ্ন মুখে মুখে ঘুরছে অনেকের। এখন পুলিশের প্রধান লক্ষ্য আরাভকে দেশে ফিরিয়ে আনা।
পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার তদন্ত করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২০১৯ সালে আরাভসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযুক্তপত্র দাখিল করা হয়। ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহিদুর রহমান জানাচ্ছেন, হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আরাভকে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
ডিবিপ্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদও জানান, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
রবিউল ওরফে আরাভের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়ায়। তাঁর বাবা ছিলেন ফেরিওয়ালা। সম্প্রতি বাবা-মা ও দুই বোনকেও দুবাইয়ে নিয়ে গেছেন তিনি।