অভিযোগ উঠেছে, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে দলীয় পতাকা নামিয়ে কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। শুক্রবার সকালে গিয়ে ওই কার্যালয় বন্ধ করার নির্দেশ দেয় পুলিশ। একই সময়ে জেলার মিরপুর উপজেলায় শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর যাওয়ার পথে বিএনপির আট নেতা-কর্মীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা দাবি করেছেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ (শুক্রবার) সকালে খোকসা বাজার এলাকায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয় খোলা হয়। সেখানে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁরা সেখান থেকে একটি মৌন শোভাযাত্রা নিয়ে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
দলীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ফুল দিতে যাওয়ার সময় প্রথমে খোকসা থানার পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পুলিশের একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল থানা বিএনপির কার্যালয়টির পাশে অবস্থান নেয়। পরে দলীয় পতাকাটি নামিয়ে থানা বিএনপির কার্যালয়টি বন্ধ করে দিতে বাধ্য করা হয়।
খোকসা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহমেদ ওরফে রাজু গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের চাপে দীর্ঘদিন ধরে থানা বিএনপির প্রধান কার্যালয়টি তালাবদ্ধ রাখা হয়। মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালনের জন্য তাঁরা সকালে কার্যালয়টি খুলেছিলেন। পুলিশের এসআই মোজাম্মেল হোসেন তাঁদের জানান, ওপরের নির্দেশ পতাকা নামিয়ে কার্যালয় বন্ধ করে চলে যেতে হবে। এরপর পুলিশ পতাকা নামিয়ে দ্রুত চলে যায়।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান খোকসার স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধান রাজনৈতিক দুটি দল একত্রে ফুল দিতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, এ জন্য পুলিশ সতর্ক ছিল। তবে বিএনপির নেতা নাফিজ আহমেদ রাজুর নেতৃত্বে শহীদবেদিতে তাঁরা ফুল দিয়েছেন। দলীয় কার্যালয় বন্ধের প্রশ্নে তিনি বলেন, কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে এমনিতেই বন্ধ রয়েছে।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে মিরপুর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিরপুর উপজেলা চত্বরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিতে যান। এ সময় মিরপুর ফুটবল মাঠের সামনে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় আটজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। মিরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রশীদ বলেন, একটি মৌন শোভাযাত্রা নিয়ে ফুল দিতে যাওয়া হয়। এ সময় পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশ জানায়, ফুল দেওয়া যাবে না। ওপরের নির্দেশ রয়েছে। এ নিয়ে সেখানে একটু উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর পুলিশ বিনা উসকানিতে আটজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার আটজন হলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবজাল হোসেন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল আহমেদ, ছাত্রদলের কর্মী শহিদুল ইসলাম, স্বেচ্ছসেবক দলের কর্মী আকাশ হোসেন, যুবদলের কর্মী ইমরান হোসেন, জুবায়ের হোসেন ও শাহিন আহমেদ।
এ বিষয়ে মিরপুর থানার ওসি রাশেদুল আলম দাবি করেন, ৭ ডিসেম্বর মিরপুর থানায় নাশকতার অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার কয়েকজন আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। অভিযান চলছিল। ফুল দিতে যাওয়ার পথে এ রকম আটজনকে শনাক্ত করে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে।