আসছে ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের অহঙ্কার ও গর্বের প্রতীক পদ্মা সেতু। সর্বাধুণিক প্রযুক্তি ও উপকরণে তৈরি এই সেতুর উদ্বোধন নিয়ে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে গোটা দেশবাসী। শুরুর দিকে এই সেতু নির্মাণের খরচ কম ধরা হলেও পরবর্তীতে বেড়ে যায়। পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচ কেন বেড়েছে তা জাতির সামনে খোলসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন সরকারপ্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যার কারণে খরচও বেড়েছে। এই দোতলা সেতুর মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।”
ব্যয় বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সরকারপ্রধান জানান, ২০১০ সালের মধ্যে নকশা চূড়ান্ত হয়। পরের বছর জানুয়ারিতে সংশোধিত ডিপিপি দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার করার কারণে ব্যয় বাড়ে। এরপর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩৭টি স্প্যানের নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচ বেড়ে যাওয়ার ব্যাখ্যায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “পদ্মা সেতুতে যুক্ত করা হয় রেল সংযোগ। কংক্রিটের বদলে ইস্পাত বা স্টিলের অবকাঠামো যুক্ত হয়। পাইলিংয়ের ক্ষেত্রেও গভীরতা বাড়ে। বাড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ব্যয়। ২০১৭ সাল থেকে সরকার জমি অধিগ্রহণে জমির দামের তিনগুণ অর্থ দেওয়া শুরু করে। ২০১৬ সালে সেতুর খরচ আবার বাড়ে। ওই সময় ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৯ টাকা কমে যায়।”
শেখ হাসিনা বলেন, “নদী শাসনে নতুন করে এক দশমিক তিন কিলোমিটার যুক্ত হয়। সব মিলে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ বেড়ে যায়। নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীকে যুক্ত করা হয়। সব মিলে পদ্ম সেতুর প্রকল্প ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। গত ২১ জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে। ওই দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়ায় উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। পরে টোল দিয়ে সেতু পার হবেন সরকারপ্রধান। পদ্মা পার হয়ে সেতুর জাজিরা প্রান্তে আবারও ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বিকেলে মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।