মার্চ ৮, ২০২৩, ০২:৩৫ পিএম
গুলিস্তান এলাকার সিদ্দিক বাজারের ক্যাফে কুইন ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান দ্বিতীয় দিনে গড়ালেও ভবনের বেজমেন্টে তল্লাশির উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না উদ্ধারকর্মীরা। ফাটলের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। সেখানে অভিযান চালাতে রাজউক ও সেনাবাহিনীর পরামর্শের অপেক্ষায় আছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইনউদ্দিন এ কথা জানিয়েছেন।
মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইনউদ্দিন বলেন, সকালে আমরা কিছুটা কাজ শুরু করেছি। তবে মূল কাজ শুরু করতে হলে অন্যন্য সংস্থার পরামর্শ লাগবে। আমরা রাজউক ও সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মূল জায়গায় কাজ শুরু করতে হলে তাদের পরামর্শ ছাড়া হবে না।
প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ভবনটির দেয়াল উড়ে যায়। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ
ভবনের বেজমেন্টে জায়গায় উদ্ধার অভিযান চালাতে একটি ‘জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জাফর হোসেন।
ভবনটি এখন ‘পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ’ জানিয়ে তিনি বলেন, রাতে ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেছিল। সকালে তারা পাশের ভবন দিয়ে কিছুটা কাজ শুরু করেছে। একটি কমিটি হয়েছে, তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে মূল ভবনের কাজ শুরু হবে।
কতজনের কমিটি এবং কারা সেখানে রয়েছেন, সে ব্যাপারে কিছু জানাননি পুলিশের এই কর্মকর্তা। তবে তিনি এও জানান, সেই কমিটি এসে মতামত দেওয়ার পরই উদ্ধার কার্যক্রমের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে এখন কোনো ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করে কাজ চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকালে ওই ভবনটিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত ১৭ জনের মরদেহ বুঝে নিয়েছে পরিবার।
বুধবার সকালে সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইনউদ্দিন জানান, নতুন করে কাউকে উদ্ধার করা হয়নি। ওই ঘটনায় সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কারো মৃত্যুও হয়নি বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
ঢাকা মেডিকেলে ছুটে আসেন নিখোঁজ স্বজনদের অনেকে। ইনসেটে নিখোঁজ ব্যবসায়ী মোমেন হোসেন সুমন । ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ
বিস্ফোরণের ঘটনার পরদিনও ক্যাফে কুইন ভবনের সামনে আসেন নিখোঁজ কয়েকজনের স্বজনেরা।
আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যক্তি সকালে ভবনের সামনে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। তিনি জানান, ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সেনেটারি দোকানে কাজ করতেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী মেহেদী হাসান স্বপন (৩৮), যিনি এখনো ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন।
সম্পর্কে স্বপনের মামা-শ্বশুর মান্নান। তিনি বলছিলেন, ভেতরে এখনো মানুষ আছে, আপনারা একটা ব্যবস্থা নিন।
শাহাদাত নামে একজন আসেন তার ছোট ভাই রবিন হোসেন শান্তকে (২০) খুঁজতে। শাহাদাত বলেন, তাদের বাড়ি শরীয়তপুরে। বছরখানেক ধরে নিচতলার আনিকা স্যানেটারিতে কাজ করতেন তার ভাই রবিন। বিস্ফোরণের পর থেকে তার হদিস পাচ্ছে না।
পুরান ঢাকার মালিটোলার বাসিন্দা আনিকা স্যানেটারির মালিক মোমেন হোসেন সুমনও (৪৫) নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান শাহাদাত।