চার বছর পর রংপুরে প্রধানমন্ত্রী; মিছিলে মুখর নগরী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২, ২০২৩, ০৯:৫৩ এএম

চার বছর পর রংপুরে প্রধানমন্ত্রী; মিছিলে মুখর নগরী

সংগৃহীত ছবি

রংপুরে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে গাইবান্ধাসহ বিভাগের আট জেলায় চলছে জোর প্রস্তুতি। বুধবার (২ আগস্ট) রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় এই মহাসমাবেশে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুরে আগমন উপলক্ষ্যে রংপুর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ভরে গেছে রংপুর নগরের শাপলা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি, পায়রা চত্বর, ডিসি মোড়, চেকপোস্ট, মেডিক্যাল মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো। বিভিন্ন স্থানে তোরণ স্থাপন করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে মঞ্চ।

মহাসমাবেশ বিকেলে হলেও, সকাল থেকেই স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা। সভাস্থল নগরীর ঐতিহাসিক রংপুর জিলা স্কুল মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে রঙিন টিশার্ট ও ক্যাপ পরিহিত নেতাকর্মীরা ঢাকঢোল পিটিয়ে আসতে শুরু করেছেন।

সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছেন দলীয় নেতারা। লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও রংপুরের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে দলে দলে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

এর মধ্যে গাইবান্ধার সাত উপজেলা থেকে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দেবেন বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক। সবাই একত্রিত হয়ে ৫০০ বাস ও অন্যান্য যানবাহন মিলিয়ে বিশাল শোভাযাত্রা নিয়ে রংপুরে যাবেন নেতাকর্মীরা।

রংপুর নগরীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।  নগরীর ২১টি পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। প্রবেশ রুটগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে জনসভায় আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

রংপুরে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশের যোগদানের পাশাপাশি ১ হাজার ২৪০ কোটি টাকার ২৭টি প্রকল্প উদ্বোধন ও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার সূচনা ও নতুন চমক পাওয়ার আশা রংপুরবাসীর।

এছাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, শেখ রাসেল ইনডোর স্টেডিয়াম, সুইমিং পুল, স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়, ১০ শয্যা বিশিষ্ট পাঁচটি হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজের মাল্টিপারপাস ভবন, বিভিন্ন সেতু ও সড়ক নির্মাণসহ প্রায় ২৭টি প্রকল্প উদ্বোধন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, পিএসসির আঞ্চলিক কার্যালয় ,কল-কারখানা পরিদর্শন অফিস, মহিলা হোস্টেলসহ আরও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

সফরসূচি অনুযায়ী, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে রংপুরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টায় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর ক্যান্টনমেন্টের হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি।

সোয়া ২টার দিকে সার্কিট হাউসে পৌঁছে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর বিকেল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন। প্রথমে সেখানে রংপুর বিভাগের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সফরে রংপুরের ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের ঘোষণা দেবেন সরকারপ্রধান। মহাসমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার পর বিকেলে আবার একই পথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দু‍‍টি নির্বাচনী জনসভা করেছিলেন। সাড়ে চার বছরের বেশি সময় পর তিনি রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Link copied!