হাশেম মিয়া। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমাজেন্সি মর্গের সামনে বসে আছে নির্বাক চোখে। চোখ দেখে বোঝা যায় ছেলের শোকে তার বুক ভেঙে যাচ্ছে হাহাকারে। কিন্তু কাঁদতে কাঁদতে চোখের জলও শুকিয়ে গেছে।তিনি অপেক্ষা করছেন গুলিস্থান ইমাজেন্সি মর্গে তার ছেলে হৃদয়ের (১৮) মরদেহ নিতে।
হাশেম মিয়া সাথে কথা বলতে চাইলে প্রথমে নিশ্চুপ থেকে হাত ইশারায় কিছু বলে নিজের বুক চাপরাতে থাকেন। কিছুক্ষন পরে কথা বলেন। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, আমার তিন ছেলে মেয়ে, হৃদয় আমার বড় ছেলে।গুলিস্থান বিআরটিসি সামনে আমার চা পানের দোকান। ভোর থেকে আমি দোকান করি আর বিকেল থেকে ছেলে দোকানে কিছুটা সময় দেয়। আজ আমার কাছে দোকানে আসতে বংশাল থেকে গুলিস্তানের দিকে আসার পথে ওই ভবনের সামনে দিয়ে আসতে ছিল। তখনি হয়ত বিস্ফোরন হইছে।আমার পোলাটা নাই,সব শেষ। এখন লাশ নিতে অপেক্ষা করছি “
প্রসঙ্গত, রাজধানীতে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের পাশে একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৮ জন নিহত ও ১২০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশংকা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে রাত পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। হাসপাতাল সূত্রে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়।
নিহতরা হলেন-ইসলামপুরের মমিনুল ইসলাম (৩৮) ও তাঁর স্ত্রী নদী বেগম (৩৫), সুড়িটোলার বাসিন্দা কাতারপ্রবাসী মো. সুমন (২১), চিটাগাং রোডের বাসিন্দা মাইনুদ্দিন আখন্দ (৪৮), আলুবাজার এলাকার মো. ইসমাইল (৪২), বরিশালের ইসহাক মৃধা (৩৫), কেরানীগঞ্জের রাহাত (১৮), চাঁদপুরের মতলবের আল আমিন (২৩), বংশালের নাজমুল হোসেন (২৫), মানিকগঞ্জের ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫) ও মুন্সিগঞ্জের আবু জাফর সিদ্দিকি (৩৪) এবং মনসুর হোসেন (৪০), আকৃতি বেগম (৭০), ইদ্রিস মীর (৬০), হৃদয় (২০) ও নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (৫৫)।