ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩, ০৫:০৫ পিএম
আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জাপানি মেজো মেয়েসহ আত্মগোপনে থাকা বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের একটি দল। বর্তমানে তাদেরকে রাজধানীর গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বি এম ফরমান আলী সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে র্যাবের একটি দল রাজধানীর কালাচাঁদপুর থেকে বাবা ছোট মেয়েসহ ওই বাবাকে উদ্ধার করে।
র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ ও জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানোর দুই শিশু কন্যা মায়ের কাছে থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। কিন্তু রায় প্রতিপালেন থানা পুলিশ বাবাসহ ছোট মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিল না। আদালতের রায় উপেক্ষা করে মায়ের কাছে সন্তানকে হস্তান্তর না করে ছোট মেয়েসহ বাবা আত্মগোপনে চলে যান। এমন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে র্যাবের একটি দল রাজধানীর গুলশানে কালাচাঁদপুর এলাকায় আত্মগোপন করা বাবা ইমরান শরিফকে ছোট মেয়েসহ হেফাজতে নেওয়া হয়।
এদিকে, আদালতের রায় অমান্য করে জাপানি মা নাকানো দ্বিতীয় বারের মতো তার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে তিনি কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ ও জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানোর দুই শিশু কন্যা মায়ের কাছে থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গত রবিবার বিকেলে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান বাবা ইমরান শরীফের দায়ের করা মামলা খারিজ করে এ আদেশ দেন।
জাপানি মা নাকানো এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির ওইদিন গণমাধ্যমকে বলেন, “বাংলাদেশি বাবা প্রকৌশলী ইমরান শরীফ দুই সন্তান নিজ হেফাজতে রাখার যে মামলা করেছেন তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ফলে দুই শিশু মায়ের কাছেই থাকবে।”
প্রসঙ্গত, জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।
মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তখন থেকেই মেয়েদের জিম্মায় রাখতে তাদের বাবা-মায়ের মধ্যে আইনী লড়াই চলে আসছে।