নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, তিনি নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অপপ্রচার বন্ধ করতে চান।
তিনি আরও জানান, নির্বাচিত হলে হলে বন্দরনগরীর চারপাশের নদীগুলোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জকে একটি 'ব্লু সিটি' হিসেবে গড়ে তুলবেন।
“আমি নারায়ণগঞ্জকে ‘ব্লু সিটি’ বলে আখ্যায়িত করেছি। আমাদের চারপাশ ঘিরে আছে ৭টি নদী। আমি সেগুলো ব্যবহারের পরিকল্পনা করছি। শহরকে সবুজায়ন করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছি। আর তাই নারায়ণগঞ্জ হবে ‘ব্লু অ্যান্ড গ্রিন সিটি’।”
সাবেক মেয়র আইভী জানান, দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তার মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং বাকিগুলোর কাজ চলমান রয়েছে।
“আমি সবগুলো প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই”, যোগ করেন আইভী।
পানির ওপর ট্যাক্স আরোপের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটা বিরোধী পক্ষের অপপ্রচার এবং বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।”
“শহরে আগে ওয়াসার সেবা পাওয়া যেত না। কোনো জায়গায় পুনরায় সেবা দেওয়া শুরু করলে সেখানকার সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের ওপর ৩ শতাংশ কর আরোপ করা হয়। তাই এটা চাপিয়ে দেওয়া ছাড়া আমার কিছু করার ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “তৈমুর আলম খন্দকার খুবই সচেতন মানুষ। সিটি করপোরেশনে ট্যাক্স অত্যন্ত বেশি বলে তিনি কেন চিঠি পাঠাননি? এটা নির্বাচনী স্ট্যান্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।”
“আমি নগরবাসীকে বলব, তারা যদি ট্যাক্স কমানোর জন্য করপোরেশনের কাছে আবেদন দেন তাহলে তারা তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী ১৫ শতাংশ ট্যাক্স কমাতে পারেন। তবে আমি তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি।”
সিটি করপোরেশন ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের অফিসে পরিণত হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ২ বারের মেয়র বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। কিছু না জেনেই তিনি (তৈমুর) এমন মিথ্যা কথা বলছেন।”
নাম উল্লেখ না করে আইভি আরও বলেন, “আমি ২০১১ সালে একজন "প্রভাবশালী প্রার্থীর" বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। তখন ওই ব্যক্তি যে ধরনের অভিযোগ তুলেছিলেন তৈমুরও একই ধরনের অভিযোগ তুলছেন।”
তিনি বলেন, “সরকার ই-টেন্ডার চালু করেছে এবং যে কেউ যে কোনো জায়গা থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন।”
“সিস্টেমে সমস্যা রয়েছে। যেভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছিল তাতে কেবল বড় ঠিকাদাররা কাজ পায়। আমি বেশ কয়েকবার এই বিষয়ে কথা বলেছি।”
আইভীর নির্বাচনী প্রচারে ওসমান পরিবারের সমর্থন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তৃণমূলের সব নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছেন। ওসমান পরিবার আওয়ামী লীগের একটি অংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তারাও (ওসমান) আমার সঙ্গে আছেন।”
“শামীম ওসমান একজন সংসদ সদস্য। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না, তবে তার অনুসারীরা আমার পাশে আছেন।”
তৈমুরের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “তিনি আমার চাচা। তিনি আমার বাবার কাছাকাছি ছিলেন এবং আমাকে বড় হতে দেখেছেন। আগামী দিনেও চাচা-ভাতিজির সম্পর্ক অটুট রাখতে চাই।”
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, “যখন তিনি বিআরটিসির চেয়ারম্যান ছিলেন এবং আমি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার সহযোগিতা পেয়েছি। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ এবং সেই সুসম্পর্ককে বাঁচিয়ে রেখে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। ফলাফল যাই হোক আমি মেনে নেব।”