মার্চ ১২, ২০২৩, ১০:৫৬ এএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রবিবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে ছোট যানবাহন চলতে দেখা গেলেও পরিস্থিতি খারাপের আশঙ্কায় বড় যানবাহনগুলো রাজশাহী বাইপাস সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। রাত তিনটা পর্যন্ত বন্ধ থাকার পর চালু হয় রাজশাহী রেলস্টেশন।
সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিন শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে স্থানীয় লোকজনের হামলা ও পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে যে কোনো সময় বিক্ষোভে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে জড়ো হয়ে তাঁরা জানান, প্রশাসনের ওপর তাঁদের আস্থা নেই। প্রশাসন দুই দিনের কথা বলে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের সময় দীর্ঘ করবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বৈঠকের পর শিক্ষার্থীদের সাথেও আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গতকাল আমাদের কাজ ছিল শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। আমরা গভীর রাত পর্যন্ত সেই চেষ্টা করেছি। কিছুক্ষণ পর আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসবো। এরপর আমরা শিক্ষার্থীদের সাথেও আলোচনায় বসব।’
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিনোদপুর ফটক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পুলিশ মোতায়েন করা আছে। অন্যদিকে বিনোদপুর বাজারে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ, ডিবি ও সোয়াট টিমকে টহল দিতে দেখা যায়।
বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৪ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর। তিনি বলেছেন, ‘তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। একজনকে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় টহলরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনোদপুরের মেস এলাকায় সাদা পোশাকে পুলিশ টহল দিচ্ছে। মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নিরাপদে আছেন। তবে দায়িত্ব নিয়ে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বাসের সুপারভাইজারের ঝামেলা হয়। সে সময় স্থানীয় এক ব্যবসায়ী হস্তক্ষেপ করলে শিক্ষার্থীর সাথে হাতাহাতি শুরু হয়। খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হয় ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জড়ো হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে তিন শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।