‘এই খাল ছিলো আমাদের চলাচলের রাস্তা। এই যে রাস্তা দেখছেন এটাতো হলো কিছুদিন যাবৎ। এই খালে আমরা খেয়া নৌকা চালাতাম। এলাকার সবাই খাল দিয়েই যাতায়াত করতো। হঠাৎ একদিন কালে দেখি খালের পাশ বয়ে চলছে ভবন নির্মানে কার্যক্রম। তারপর থেকে একটা করে ভবন উঠছে আর খাল নাই হয়ে গেছ ’। দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাথে আলাপকালে খাল দখলের কথা জানাচ্ছিলেন যাত্রাবাড়ি শ্যামপুর খালের পশ্চিম মোহাম্মদ বাগ অংশের দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা ইসমাইল হক।
বর্ষায় পানি প্রবাহ বন্ধ
খালের ওপর ভবন নির্মাণ হওয়ায় বর্ষায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এ জলাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসীদের। পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে প্রতিটি বাড়ির সুয়ারেজ লাইনের ময়লা চলে আসে মূল সড়কে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়ে এলাকাবাসীরা।
খালের দখল নিয়ে একই অভিযোগ করেন ইসরাফিল হোসেন। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ‘ভরা বর্ষায় পানি থাকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ। যার ফলে আমরা চরম ভোগান্তিতে পরি। কোনভাবেই এটা সংস্কারের কাজ হচ্ছে না’।
ওয়াসাকে অভিযুক্ত করলেন কাউন্সিলর
তবে ওয়াসার কারণে খাল দখলমুক্ত করতে পারছিলো না বলে জানান ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ৫৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের আগে খালগুলো দেখভাল করতো ওয়াসা। যার ফলে আমরা কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি নেই। এখন খালগুলো সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, খুব দ্রুত খালগুলো দখল মুক্ত করবো।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে খালের আশে পাশে যত অবৈধ ভবন আছে তা আমরা জরিপ করা শুরু করেছি। খালের সীমানা নির্ধারণ করে দখল মুক্ত করা হবে।
সিটি কর্পোরেশন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকতা হায়দার আলী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, আমরা যতটুকু কাগজপত্র দেখেছি, খালটির প্রস্থ ৩০ থেকে ৩৫ ফিট। খালটি আমরা শীগ্রই জরিপ করে সীমানা নির্ধারণ করবো।
নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর খালের পশ্চিম মোহাম্মদ বাগ অংশ পরিদর্শন করেন ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার জিরানি ও মান্ডার পর শ্যামপুর খাল দখলমুক্ত করার কাজে নেমেছি। তবে এ খালের মধ্যে অনেক ঝামেলা আছে। যেগুলো দূর করতে একটু সময় লাগবে।
দখলদারদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, কোন দখলদারই আমাদের কাছে ঠাই পাবে না। দরকার পরলে আমরা জেল জরিমানা পর্যন্ত করবো।