পরপর দুবার পরাজিত হয়ে তৃতীয় দফায় ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে জয় পেয়েছে রজব আলী। শপথ গ্রহণ করে দুধ দিয়ে কার্যালয় ধুয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন ওই নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান। পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়ন এমন ঘটনা ঘটে। তার দাবি,আগের চেয়ারম্যান অনেক অনিয়ম, অসামাজিক কর্মকাণ্ড করে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় অপবিত্র করেছেন। তাই দুধ ও গোলাপজলে কার্যালয় ধুয়ে নেন। আজ বুধবার মিলাদ মাহফিল করে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন তিনি।
ছবি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
দুধ দেয়ার ঘটনা মঙ্গলবার বিকেলে। ‘কার্যালয় পবিত্র করে’ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রজব আলী। পরে ঘটনাটির ছবি তুলে স্থানীয় লোকজন ফেসবুকে দিলে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে গত ২৮ নভেম্বর ইউনিয়নটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দুইবারের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলামকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী রজব আলী বিজয়ী হন। দুজন আবার সম্পর্কে আপন ভায়রা। এরপর ৯ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করে ১১ জানুয়ারি বিকেলে দুধ ও গোলাপজল দিয়ে কার্যালয় ধুয়ে পরিষ্কার করে নেন নতুন চেয়ারম্যান রজব আলী।
অপমানজনক বলল সাবেক চেয়ারম্যান
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রজব আলীর দাবি, গত কয়েক বছরে ইউনিয়ন পরিষদে বহু অসামাজিক কর্মকাণ্ড হয়েছে। তাই পরিষদ কার্যালয় পবিত্র করতে তিনি কর্মী সমর্থকদের পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু কর্মীরা অতি উৎসাহিত হয়ে দুধ ও গোলাপজল দিয়ে কার্যালয় পরিষ্কার করেছেন।
তবে বিষয়টিতে অপমানজনক মনে করেছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘শুনলাম, আমি নাকি খারাপ মানুষ ছিলাম। পরিষদে খারাপ কাজ হতো। তাই দুধ আর গোলাপজলে ধুয়ে নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমিও দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলাম। কোনো দিন আগের চেয়ারম্যানদের এভাবে অসম্মান করিনি। কিন্তু নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আমাকে অসম্মান করেছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় আমাকে কার্যালয়েও ডাকেননি। সচিব এসে স্বাক্ষর নিয়ে গেছেন। পুরো বিষয়টি আসলে নিচু মানসিকতার পরিচয়।’
এ প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রজব আলী বলেন, ‘আমি মুসলমান। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। তাই পরিষদ ধুয়ে মুছে, মিলাদ দিয়ে পরিষদকে পবিত্র করে প্রথম কার্যদিবস শুরু করেছি। কাউকে ছোট করতে কাজটি করা হয়নি। আশা করছি, এখন থেকে ইউনিয়ন পরিষদে আর কোনো অপবিত্র কাজ হবে না।’