মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত না হলেও এবার ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আয়োজিত শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বলা হয়, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শোলাকিয়ার জামাত আয়োজন করা হবে।
সভায় আরও বলা হয়, সকাল ১০টায় ঈদুল ফিতওেরর জামাত শুরু হবে। এতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। জামাতে জায়নামাজ ও মাস্ক ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না আনতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম গণমাধ্যমকে বলেন, “করোনার কারণে গত দু বছর শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। এবছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে শোলাকিয়া ঈদ জামাতের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
নিরাপত্তা বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আয়োজন করা হবে ঈদের জামাত। পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। পুরো মাঠ ও আশপাশ সিসি ক্যামেরার আওতার মধ্যে থাকবে। তা ছাড়া প্রত্যেক মুসল্লিকে কমপক্ষে চার ধাপের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে মাঠে যেতে পারবেন না।”
জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের জামাতটি হবে ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাত। এখানে সবশেষ ২০১৯ সালের ৫ জুন ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
জনশ্রুতি রয়েছে, ১৮২৮ সালে সোয়া লাখ মুসল্লি এখানে একসঙ্গে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় “সোয়া লাখিয়া”। পরবর্তীতে এটি শোলাকিয়া নামে পরিচিতি পায়।