বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিক সমিতি। আগামী শনিবার পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে কি কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে গতবুধবার সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ করে স্পিডবোট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ভোলার ভেদুরিয়া ঘাটে স্পিডবোট মালিক-চালকদের সঙ্গে যাত্রীদের গোলযোগের খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে স্পিডবোট বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভোলা-বরিশাল রুটের লাইন সুপারভাইজার তারেক শাহ। তিনি জানান, এ রুটে প্রতিদিন দুই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করে। ভোলা মালিক সমিতির লোকজন এ ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার রাত ১০টার দিকে তারা আমাদের জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে। ভোলার স্পিডবোট মালিক মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘ধর্মঘট ডাকা হয়েছে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত।’
এদিকে লঞ্চ চলাচল বুধবার পর্যন্ত বন্ধ নাহলেও আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েই তা বন্ধ করতে পারেন বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন। সূত্রটি জানিয়েছে, কোনো কারণ না দেখিয়েই আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর ঢাকা-বরিশাল ও বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল আকস্মিক বন্ধ রাখবে মালিক পক্ষ। তবে লঞ্চ মালিকরা এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
এর আগে, শুক্র ও শনিবার ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলার পরিবহন মালিক সমিতি। বরিশালে বাস মালিকদের দু’টি সংগঠনের পাশাপাশি তিন চাকার গাড়ির মালিক ও শ্রমিক সমিতিও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যদিও পরিবহন মালিক সমিতি বিএনপির সমাবেশের কারণে ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি স্বীকার করেনি। বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে আমাদের ডাকা ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। বাস মালিকদের মধ্যে তো বিএনপি নেতারাও আছেন। রাজনীতির সঙ্গে পেশাজীবী সংগঠনকে জড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে, আমাদের লোকসান হচ্ছে। এই কারণে থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি।’
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, ‘এই ধর্মঘটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। বাস মালিক সমিতিতে বিএনপি-আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি সব দলের নেতারা রয়েছেন। তারা তাদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট ডেকেছে।’ তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘আমরা তো নিশ্চিত করে বলছি, বাস বা থ্রি-হুইলার ধর্মঘটের পেছনে সরকারের ইনডাইরেক্টলি হাত রয়েছে। সরকার দলীয় লোকজন পরিবহন সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে বসা। তারা তো আমাদের সমাবেশ বানচাল করার চেষ্টা করবেই। পরিবহন সংগঠনগুলো আওয়ামী লীগের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় চলে। তাদের নিয়ন্ত্রণে সবকিছু। তবে এসব করে কোনো লাভ নেই, মানুষ সাঁতরে হলেও সমাবেশে যোগ দেবে।’
উল্লেখ্য, আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ করার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। সমাবেশস্থলের মাঠসহ আশপাশের রাস্তায় ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড লাগানোর কাজ চলছে পুরোদমে। উদ্যানের একাংশে মঞ্চ নির্মাণের কাজ চলছে। আর সব কাজ তদারকি করছেন নেতাকর্মীরা।