এপ্রিল ২৭, ২০২৩, ০৫:২০ পিএম
বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে জাপানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির জন্য জাপানের টেকসই এবং উদার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি বুধবার (২৬ এপ্রিল) আকাসাকা প্যালেস গেস্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কক্ষে শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে দুই পক্ষই বাংলাদেশ ও জাপানের সুদৃঢ় বন্ধুত্বের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উপভোগ করছে এবং বর্তমানে এই বন্ধুত্ব দিন দিন মজবুত হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গৃহীত বড় বড় উন্নয়ন উদ্যোগে জাপানের অবদান স্পষ্ট। রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করতে জাপানের অব্যাহত সহায়তা ও সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশ নির্ভর করছে।
এ সময় তিনি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য এবং আইএমও মহাসচিব পদে আগামী ১৭-১৮ জুলাই, ২০২৩ লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য সংস্থার আসন্ন সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রার্থিতার প্রতি জাপানের সমর্থন চেয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপানের উন্নয়নের মডেলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জাপানের উন্নয়ন মডেলের একজন প্রবল অনুরাগী ছিলেন এবং তিনি জাপানের অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়তে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৩ সালের ১৮-২৪ অক্টোবর জাপানে সরকারি সফরের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সফর আজকের বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তিস্থাপন করেছে। বাংলাদেশ ও জাপান অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উপভোগ করছে এবং বর্তমানে এই বন্ধুত্ব দিন দিন মজবুত হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা এবং জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়েই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।
উভয় নেতা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বন্ধুত্ব দিন দিন সুদৃঢ় হচ্ছে।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক দেশটির স্বাধীনতার জন্য জাপানি জনগণের অটল সমর্থন থেকে উদ্ভূত হয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জাপান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। গত বছর (২০২২), আমরা আমাদের দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করেছি। এ উদ্যাপনে অংশ নেয়ার জন্য জাপানের সরকার এবং জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও জনগণের মধ্যে বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করেছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাপানে তাঁর ষষ্ঠ সফরে আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে তার জাপান সফরের কথা স্মরণ করেন যখন দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫তম বার্ষিকী পালন করেছিল।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষি, শিক্ষা, আইসিটি ও স্বাস্থ্যসহ প্রতিটি খাতে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাপান সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে আছে এবং আগামী দিনেও জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
বাংলাদেশ-জাপান কমিটি ফর কমার্শিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের চেয়ারম্যান, জাইকার প্রেসিডেন্ট, জেট্রোর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পার্লামেন্টারি লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবন আকাসাকা প্যালেসে আলাদা সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।