মে ১৯, ২০২২, ০৬:২১ পিএম
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়ার যে বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন তা স্বাভাবিক কোন বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ফখরুল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য যুক্তিযুক্ত নয়। ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন উক্তি বিরোধীদলের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির শামিল। এমন অরাজনৈতিক, অশালীন বক্তব্য কখনোই আশা করা যায় না। বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ও নিন্দা জানায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে এভাবে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেন যা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। এমন একটি নেতৃত্ব জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। ড. ইউনুস সম্পর্কেও তিনি যে কথা বলেছেন তাও লোকাচার ও ভদ্রতা বহির্ভূত। প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্য জীবনের প্রতি হুমকি স্বরূপ বলা যেতে পারে। যা একজন সুস্থ মানুষ কখনোই চিন্তা করতে পারে না। তাঁর এমন মন্তব্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার বিষয়ে ভাববে বিএনপি।
ক্ষমা চেয়ে বিএনপি পদ্মা সেতু ব্যবহার করতে পারবে- তথ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু কারো বাবার টাকায় তৈরি হয়নি। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি। সেই টাকাও আওয়ামী লীগ লুট করেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয় ১০ হাজার কোটি থেকে ৪০ হাজার কোটিতে গিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত দুটি নির্বাচন ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। যে নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি, জনগণ ভোট দিতে পারেনি। বিদেশিদের সাথে বিএনপি যোগাযোগ করে না বরং আওয়ামী লীগই যোগাযোগ করে। তারাই আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য। এক-এগারোর সময় সামরিক সমর্থন নিয়ে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছিল তাদের পেছনেও আওয়ামী লীগ ছিল বলে জানান ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে বিএনপি এখনও কোনো চিন্তা করছে না। তিনি বলেন, এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে এবং নতুনভাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণকে ভোট দেওয়ার অধিকার দিতে হবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিতরাই সরকার গঠন করবে।
গত নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি ভুল করেনি এবং তার আগে নির্বাচন বর্জনও ভুল ছিলো না। তিনি বলেন, পূর্বে নির্বাচন বর্জন করা হয়েছিল কেয়ারটেকার সরকারের কারণে আর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না এটি প্রমাণ করার জন্য পরবর্তীতে নিবাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি।
এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি আল মামুন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।