বাংলাদেশের জেলাগুলোর মধ্যে গাজীপুরে সবচেয়ে বেশি বায়ু দুষণ হয়। এই জেলায় বায়ুদূষণের মান প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩ দশমিক ৫১ মাইক্রোগ্রাম।গাজীপুরের পরেই ঢাকার অবস্থান যার বায়ুমান ২৫২ দশমিক ৯৩ মাইক্রোগ্রাম। তৃতীয় স্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যেখানে বায়ু দূষণের মান প্রতি ঘনমিটারে ২২২ দশমিক ৪৫ মাইক্রোগ্রাম। তবে সবচেয়ে ভাল বায়ুমানের জেলা হিসেবে কুড়িগ্রামের নাম শীর্ষে রয়েছে। এই জেলার বায়ুদূষণের মান প্রতি ঘনমিটারে ৬৩ দশমিক ৩৩ মাইক্রোগ্রাম।
বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র-ক্যাপসের ৬৪ জেলার বায়ুমান বিষয়ক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপসের ওই গবেষণা রিপোর্ট তুলে ধরেন অধ্যাপক ড. আহম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
দেশের ৬৪ জেলার বায়ুমান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্যালোচনা করে বেসরকারি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’র বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদারের নেতৃত্বে ৮১ সদস্যের একটি দল গবেষণা করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গবেষণায় ৬৪ জেলার মধ্যে ১০ জেলার বায়ুমান ভাল পাওয়া যায় যার বায়ুদূষণের মান প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রামের নিচে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজীপুর জেলা, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বায়ুমান ছিল দেশের আদর্শমানের চেয়ে প্রায় ৪-৫গুণ বেশি। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী পরবর্তী ক্রমে রয়েছে যথাক্রমে হবিগঞ্জ, নোয়াখালী টাংগাইল,কক্সবাজার, চাদপুর, চট্টগ্রাম এবং কিশোরগঞ্জ জেলা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমি ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ ছিল মিশ্র এলাকায় যার মান প্রতি ঘনমিটারে ১১১ দশমিক ৯০ মাইক্রোগ্রাম।পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাণিজ্যিক এলাকা (১১১.৪), রাস্তার সংযুক্তি এলাকা (১১০.৮), আবাসিক-শিল্প এলাকা (১০৬.৭) এবং সংবেদনশীল এলাকা ( ৯৭.৩)
অধ্যাপক ড. আহম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “দেশব্যাপী বায়ু দূষণের তথ্য সংগ্রহ করা, জেলাগুলোর বায়ু দূষণের ক্রম এবং জেলাভিত্তিক দূষণের মানচিত্র তৈরি করাই গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৪ জেলা শহরগুলোতে ৭ ধরণের ভুমির ব্যবহারের উপর বৈজ্ঞানিক মান পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে গবেষণা প্রতিবেদন তেরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার সর্বমোট ৩১৬৩টি স্থানের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম যা দৈনিক আদর্শ মানের (৬৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি বলে গবেষণায় উঠে আসে।