ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টানা দুই দিনের বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষে হতাহতের পর হরতালের দিনেও ফের সহিংস হয়েছে হেফাজতে ইসলাম সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
সকাল থেকে হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে লাঠিসোটা নিয়ে পুরো শহরে মিছিল করেছে তারা। হেফাজত কর্মীরা রোববার বেলা ১১টার দিকে মিছিল করে পুরো শহরের বিভিন্ন জায়গায় রিকশার টায়ার, রাস্তার পাশে রাখা ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীতে আগুন দেয়।
পূর্বঘোষিত হরতালে শহরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা। রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, জেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ মার্কেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, জেলা ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, জেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালাচ্ছে হরতালের সমর্থনকারীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রেসক্লাবে ভাঙচুরের সময় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়ে জেলা সদর হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মাথায় আঘাতের স্থানে বেশ কয়েকটি সেলাই করা হয়েছে।
এদিন সকাল থেকেই হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে। হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সভা করে। সেখানে বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের জেলার সাধারণ সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোবারক উল্লাহসহ অনেকে।
এর আগে, শনিবার রাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন নিহত হয় বলে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সাজিদুর রহমান জানান। এছাড়াও আরো অনেক ছাত্র গুরুতর আহত হয়।