মসজিদের বারান্দায় আর কোরআন রাখা হবে না: দারোগাবাড়ী মসজিদের ইমাম

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২১, ২০২১, ১২:৪৮ পিএম

মসজিদের বারান্দায় আর কোরআন রাখা হবে না: দারোগাবাড়ী মসজিদের ইমাম

‘আগামী দিনে আমরা সতর্ক থাকব,মসজিদের বারান্দায় আর কোরআন শরিফ রাখব না’ বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার দারোগাবাড়ী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ইয়াছিন নূরী।

সম্প্রতি কুমিল্লার একটি মাজারের মসজিদ থেকে কোরআন এনে পাশের পূজামণ্ডপে রাখার ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ার পর ওই মাজারের কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবিষ্যতে তারা আর মসজিদের বারান্দায় অরক্ষিত অবস্থায় কোরআন শরিফ রাখবে না।

গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা।

ওই ঘটনার জেরে ওই মণ্ডপের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় নগরীর আরও  কয়েকটি পূজামণ্ডপ। ধীরে ধীরে দেশের চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

বুধবার (২০ অক্টোবর) সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তদন্তসংশ্লিষ্টদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রেখেছিলেন ইকবাল হোসেন নামের স্থানীয় এক যুবক। সহিংসতার আগের রাতে তিনি কোরআনটি নিয়েছিলেন মণ্ডপের পাশের শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারের মসজিদের বারান্দা থেকে।

সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি। 

ইকবাল রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে কোরআন শরিফটি হাতে নিয়ে মণ্ডপের দিকে রওনা হন। এরপর মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর কোরআন রেখে ফিরে আসেন। এসব দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়।

নানুয়ার দিঘির পাশেই শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারটির অবস্থান। মণ্ডপ থেকে হেঁটে যেতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ মিনিট। দারোগাবাড়ী মাজার নামে কুমিল্লাবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিতি রয়েছে মাজারটির। এই মসজিদের বারান্দায় তিলাওয়াতের জন্য রাখা থাকে বেশ কয়েকটি কোরআন শরিফ। রাত-দিন যেকোনো সময় যে কেউ এখানে এসে তিলাওয়াত করতে পারেন।

মসজিদের বারান্দায় কোরআন শরিফ রাখার কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘অনেকেই মাজারে এসে কোরআন শরিফ দিয়ে যান। এসব কোরআন শরিফে মসজিদের ভেতরের সেলফ পূর্ণ হয়ে গেছে। তাই কিছু কোরআন শরিফ বারান্দায় রাখা হয়েছিল। তাছাড়া বারান্দায় রাখলে যেকোনো সময় যে কারও জন্য তিলাওয়াতেরও সুবিধা হয়।

‘আমরা তো বুঝতে পারিনি কেউ এখান থেকে কোরআন শরিফ নিয়ে গিয়ে এমন কাজ করবে। আগামী দিনে আমরা সতর্ক থাকব। মসজিদের বারান্দায় আর কোরআন শরিফ রাখব না।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, প্রধান অভিযুক্ত ইকবালের সহযোগী অন্তত চারজন এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ইকবাল গ্রেপ্তার হলেই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

Link copied!