মসজিদের সামনে দিয়ে কীর্তন করতে করতে যেতে নিষেধ করলে তা অমান্য করার ঘটনায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কিছু দোকান ও কয়েকটি বাড়িতে দুর্বৃত্তদের ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৭ আগস্ট) খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামে সন্ধ্যা পৌনে ৬ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খুলনা রূপসা থানা পুলিশ ও পুলিশ সুপার বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও রূপসা থানা পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে পূর্বপাড়া মন্দির থেকে শ্রীকৃষ্ণের কয়েকজন নারীভক্ত কীর্তন করতে করতে শিয়ালী মহাশ্মশানের দিকে যাচ্ছিলেন। শ্মশানে যাওয়ার মাঝপথে একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের ইমাম ওই সময় নারীদের কীর্তন করতে নিষেধ করেন। এ বিষয়ে তখন কিছুটা তর্কাতর্কি হয়। বিষয়টি নিয়ে শনিবার (৭ আগস্ট) থানায় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। পরে শনিবার সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে শতাধিক যুবক রামদা, চাপাতি, কুড়াল নিয়ে শিয়ালী গ্রামে হামলা চালায়। তারা স্থানীয় বাজারের গণেশ মল্লিকের ওষুধের দোকান, শ্রীবাস মল্লিকের মুদি দোকান, সৌরভ মল্লিকের চা ও মুদি দোকান, অনির্বাণ হীরার চায়ের দোকান ও তার বাবা মজুমদারের দোকান ভাঙচুর করে।
ভাঙ্চুর চালানোর পর স্থানীয় শিবপদ ধরের বাড়িতে লুটপাট করে এবং তার বাড়ির গোবিন্দ মন্দির, শিয়ালী পূর্বপাড়া হরি মন্দির, শিয়ালী পূর্বপাড়া দুর্গা মন্দির, শিয়ালী মহাশ্মশান মন্দিরের বেশিরভাগ প্রতিমা ভাঙচুর করে। এ সময় কয়েকজন বাধা দিতে গেলে তাদের পিটিয়ে আহত করা হয়। এলাকাবাসী প্রতিরোধ তৈরি করার আগেই যুবকরা পালিয়ে যায়।
ঘাটভোগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাধন অধিকারী গণ মাধ্যমে জানান, পাশের চাঁদপুর গ্রামের যুবকরা এই ভাঙচুরে অংশ নেয়। তিনি বলেন, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সার্কেল এসপি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবাই ঘটনাস্থলে এসেছেন।’
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। শনিবার রাতে এ ঘটনায় মামলা দোয়ের হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
খুলনা জেলার পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান গণমাধ্যমে বলেন, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় মানুষকে নিয়ে আমরা কাজ করছি । ওই অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।