ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩, ০১:২৯ পিএম
মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) ভারতীয় কোম্পানির মালিকানাধীন ব্যাগ তৈরির কারখানা ‘ভিআইপি’ ১নং প্লান্টে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে আগুন লাগে। ২০ ঘণ্টা পর বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কারখানার অভ্যন্তরে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
‘ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিডেট’ এর হেড অব এইচ আর মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তাদের মোংলা ইপিজেডে ৯টি প্লান্টের মধ্যে ১ নম্বর প্লান্টে হঠাৎ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে গেলেও ততক্ষণে কারখানাটি পুড়ে যায়। এ সময় কারখানাটিতে থাকা লাগেজ তৈরির কাঁচামালসহ তৈরি লাগেজ ছিল। যা বেশ কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্রে রপ্তানির অপেক্ষায় ছিল। এ ছাড়া এ কারখানায় রাসায়নিক আঠা, পলিথিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজ যন্ত্রপাতিও সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়ে মোট ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ লাগেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে কর্মরত তাদের প্রায় ৭০০ শ্রমিক নিরাপদে দ্রুত বেরিয়ে এসেছে। এ জন্য কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মোংলা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৩ সালে ভারতীয় কোম্পানি ভিআইপি ইন্ডাষ্ট্রি বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিডেট এখানে বিনিয়োগ শুরু করে। শুরুতে তারা ছয়টি প্লান্টের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদনে যায়। পরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তাদের এখন ৯টি প্লান্ট রয়েছে এখানে। এসব কারখানায় ব্যাগ অ্যান্ড লাগেজ তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখানকার উৎপাদিত লাগেজ রপ্তানি করা হয়।
মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, ‘ইপিজেডের ভিতরে ভিআইপির ১ নম্বর প্লান্টের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও আগুন পুরোপুরি নেভেনি। কারখানাটিতে আগুন লেগে ভিআইপির অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (হিসাব) আবুল হাসান মুন্সিকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।’
মোংলা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার ঘটনায় ভিআইপি কারখানার কর্মকর্তা আশিস কুমার কর্মকার বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে মোংলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ডায়েরিতে তিনি অগ্নিকাণ্ডে কারখানাটির প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
আগুন লাগার মূল রহস্য এখনও জানা না গেলেও কারখানাটির কর্মকর্তারা দাবি করেছেন- বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। অবশ্য ঘটনার সময় কারখানাটির অভ্যন্তরে কাজ করছিলেন এমন বেশ কয়েকজন শ্রমিক কর্মচারীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের আগে প্লান্টে ওয়েল্ডিং-এর কাজ চলছিল। এক পর্যায়ে হঠাৎ করে ওয়েল্ডিং-এর ফুলকি পাশে থাকা ফেব্রিক্সে ছড়িয়ে পড়ে আগুন লেগে যায়।