শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে অনীহা মালিকপক্ষের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৯:৫৯ পিএম

শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে অনীহা মালিকপক্ষের

দেশের বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের নতুন করে মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনেরও উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয়। এ জন্য গত ২৬ জানুয়ারি শ্রমিক ও কারখানা মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের নামের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো নিয়ে কোন সভা বা প্রতিনিধিও করেনি দেশের বিভিন্ন খাতের মালিকপক্ষ।

এখনও প্রতিনিধি করেনি মালিকপক্ষ

১ ফেব্রুয়ারি পোশাক শিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) কাছে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের বিষয়ে তাদের প্রতিনিধির নামের তালিকা চেয়ে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এরপরও এখন পর্যন্ত নতুন কোন কমিটি গঠন করে প্রতিনিধি পাঠানো হয়নি।

বিজিএমইর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমরা একটি সভা ডেকে সেখান থেকে প্রতিনিধি বাছাই করব। আশা করছি, শীঘ্রই প্রতিনিধি প্রেরণ করা হবে।

যোগাযোগ করা হলে বিকেএমইএ'র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি। ধারণা করছি, সহসাই নতুন মজুরি বোর্ড গঠন হবে। বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে হয়।

২২ হাজার টাকা বেতনের দাবি!

তৈরি পোশাক শিল্পে বর্তমানের ৪০ লাখের মতো শ্রমিক কাজ করেন। এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের শুরুর দিকে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয় এবং ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে শ্রমিকদের ন্যূনতম ৮ হাজার নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয়।

অবশ্য দেশে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিকহারে বাড়তে থাকায় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি উঠতে থাকে। এ দাবিতে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে রাজধানীর মিরপুর এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় শ্রম অসন্তোষও দেখা দেয়।

বর্তমানে মাসিক ৮ হাজার ৩৭৫ টাকা বেতন দেওয়া হয় তৈরি পোশাক খাতে নিয়োজিত কর্মচারীদের। কিন্তু নতুন মজুরী বোর্ডে কি পরিমান বেতন নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি মালিক পক্ষ।

বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে শ্রমিক প্রতিনিধির নাম পাঠিয়েছি। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন হবে।"

চলতি মাসে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামে শ্রমিকদের সাতটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম নতুন মজুরি বোর্ড গঠন ও শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২২ হাজার করার দাবি জানায়।

১৩ সংগঠনের মালিকপক্ষ চুপ করে

বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে হয়। এরফলে সম্প্রতি সময়ে পরিবর্তনকৃত বৃহৎ ১৩ টি খাতের শ্রমিকদের মজুরী নির্ধারণ করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খাতগুলোর মালিকপক্ষ এখনও কোন সাড়া দেয়নি। বেসরকারি খাতগুলো হলো বাংলাদেশ স্থল বন্দর, হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, হোসিয়ারি, সোপ এন্ড কসমেটিকস, ফার্মাসিউটিক্যাল, টি প্যাকেটিং, জাহাজ ভাংগা, ট্যানারি, দর্জি কারখানা, কটন টেক্সটাইল, বেকারি-বিস্কুট ও কনফেকশনারী, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ, এ্যালুমিনিয়াম এন্ড এনামেল।

Link copied!