নৌপথে ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি যাত্রীদের যাতায়াত খরচ কমানোর জন্য গুলিস্থান থেকে সদরঘাটে উড়াল অথবা পাতাল সড়ক নিমার্ণের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এছাড়া যাত্রাবাড়ী,কেরাণীগঞ্জসহ বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার ও সদরঘাটের সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার তাগিদ দেয়া হয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয় উপস্থাপন করা হয়।
যা রয়েছে প্রতিবেদনে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদরঘাট টার্মিনাল, শ্যামবাজার থেকে সদরঘাট টার্মিানাল এবং বাবু বাজার ব্রিজ থেকে সদরঘাট টার্মিনাল পর্যন্ত রাস্তার বেশিরভাগ জায়গা হকার, ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ী, ও অলস যানবাহন রাখার ফলে যাতায়াতে ‘চরম’ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা, যা ঈদের সময় কয়েকগুণ বাড়ে।এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুবিধার জন্য সদরঘাট ও পুরান ঢাকার পাইকারি বাজার অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে প্রতিবেদেন বলেছে বিআইডব্লিইউটিএ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নদী বন্দরের বাম পাশে শশ্মানঘাট থেকে অত্যাধুনিক টার্মিনাল ঘাট নির্মাণ বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে। ‘বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ: দ্বিতীয় পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ঢাকার চারপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, সীমানা পিলার, বিনোদন পার্ক, নির্মাণ করার কার্যক্রম চলছে।
বাস্তবায়ন হয়েছে অনেক কর্মকান্ড
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন বিভাগ) কাজী ওয়াকিল নওয়াজ দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ইতোমধ্যে সাইকেল মাঠে আমরা যাত্রীদের গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তি আরও কমাতে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত আন্ডারপাস বা ফ্লাইওভার নির্মাণ করার সুপারিশ রয়েছে। এসব কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নদীবন্দরটি আরও গতিশীল হবে।নদীবন্দরের সামনের রাস্তাটি প্রশস্ত করার পাশাপাশি পার্কিং ইয়ার্ড করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
‘আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ বিশেষ ধরনের পল্টুন নির্মাণ’ শীর্ষক আরেক প্রকল্পের আওতায় নৌযানে যাত্রীদের সহজে ওঠানামা এবং নৌপথে নৌযানের সহজ বার্থিংয়ের সুবিধার্থে ২১টি পন্টুন ও ২১টি গ্যাংওয়ে জেটি এবং দৃষ্টিনন্দন বুকিং কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। গুরুত্ব বিবেচনায় আরও পন্টুন স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
থাকবে না সদরঘাটই
বিআইডব্লিউটিএর প্রস্তাবের বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সদস্য এস এম শাহজাদা বলেন, বর্তমান জায়গা থেকে সদরঘাট সরিয়ে নেওয়ার একটা পরিকল্পনা সরকারের আছে। সেটা বাস্তবায়ন হয়ে গেলে তখন এখনকার যানজট আর থাকবে না। আর বিআইডব্লিইউটিএ যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা একটা প্রস্তাব, বিবেচনা সরকারের। এটাতো আর বিআইডব্লিইউটিএ করবে না। তাদের কাজও নয়।সদরঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮০ থেকে ১৫০টি ডাবল ডেকার লঞ্চ দেশের দক্ষিণ, দক্ষিণ- পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে ছেড়ে যায় এবং সমপরিমাণ লঞ্চ ফিরে আসে। কয়েক লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করার পাশাপাশি নিম্নবিত্ত কর্মজীবী মানুষের একটা বড় অংশ সদরঘাটের কাছে বুড়িগঙ্গা নদীর উভয় পাড়ে বসবাস করেন, যাদের বড় অংশ নৌকায় করে বন্দর দিয়ে সহজে ও স্বল্পসময়ের মধ্যে যাতায়াত করেন। সড়কপথে যানজট, ফেরি সংকটসহ নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও নৌপথে এ ধরনের কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকায় দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য নৌপথ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।