দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিব আর নেই। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাত ১১টায় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশ রূপান্তরের নির্বাহী সম্পাদক মোস্তফা মামুন।
মোস্তফা মামুন বলেন, শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় গত তিন দিন আগে তাঁকে বিআরবি হাসপাতাল থেকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও অবস্থা খারাপ হতেই থাকে। অবশেষে তিনি আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।
২১ জুলাই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অমিত হাবিবকে। অফিস চলাকালে তিনি স্ট্রোক করেন।
নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের যুগ্ম-পরিচালক ডা. বদরুল আলম মন্ডল বলেন, উনি ব্রেনস্ট্রোক করেছিলেন, যেটাকে আমরা বড় স্ট্রোক বলেই মনে করি। যাকে আমরা বলি, ব্রেনস্টেন হেমারেজ। সেখানে প্রচণ্ড মাত্রায় রক্তক্ষরণ হয়েছিল।
ডা. বদরুল আরও বলেন, এ ধরনের রোগীকে সাধারণত সেভ করা যায় না। কারণ অপারেশনেরও কোনো সুযোগ নেই। ব্রেনের এ জায়গাটাতে মূলত অপারেশন চলে না। তারপরও আমাদের চিকিৎসকরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। সর্বশেষ রাত ১১টার দিকে আমাকে জানানো হয়েছে তিনি আর নেই।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে খবর গ্রুপ অব পাবলিকেশন্সে একই সাথে রিপোর্টার ও সাব-এডিটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন অমিত হাবিব। পরে সাপ্তাহিক পূর্বাভাস পত্রিকায় সাব-এডিটর পদে যোগ দেন তিনি। পরে ১৯৯১ সালে দৈনিক আজকের কাগজ পত্রিকায় সিনিয়র সাব-এডিটর হয়ে কাজ করেন। এর পরের বছর একই পদে যোগ দেন দৈনিক ভোরের কাগজে। অল্প দিনের মধ্যে পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও পরে বার্তা সম্পাদক হন তিনি।
২০০৩ সালে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন অমিত হাবিব। তবে পত্রিকাটি বাজারে আসে ২০০৬ সালে। ২০০৭ সালে চীনের আন্তর্জাতিক বেতারে বিদেশি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যোগ দিয়ে বেইজিংয়ে কর্মরত থাকা অমিত হাবিব দেশীয় সাংবাদিকতার সাথে দূরত্বের কথা বিবেচনায় সেটি ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন। পরের বছর দৈনিক সমকালে প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি। দৈনিক সমকালের প্রধান বার্তা সম্পাদকের পদ ছেড়ে ২০০৯ সালে কালের কণ্ঠে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পরে ২০১৩ সাল থেকে উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
সবশেষ ২০১৭ সালে দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন অমিত হাবিব। সেখানেই তিনি কর্মরত ছিলেন।
সাংবাদিক অমিত হাবিবের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো শোক বার্তায় মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।