করোনা কাল কেটে চিরচেনা রূপে মঙ্গল শোভাযাত্রা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৪, ২০২২, ০১:১০ পিএম

করোনা কাল কেটে চিরচেনা রূপে মঙ্গল শোভাযাত্রা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিধিনিষেধের কারণে গত দুই বছর বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা যায়নি। তবে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবার দেশ জুড়ে চলছে বর্ষবরণ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান।এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা।

বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র থেকে হাজারো মানুষ এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। সকাল সাড়ে ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রাটি ভিসি চত্বর রাস্তা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হলেও এবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের জন্য গতিপথের পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিফ ছিল। এছাড়াও রঙ-তুলির আঁচড়ে আঁকা বাঘ, সিংহসহ নানা রকমের মুখোশের দেখা মিলেছে শোভাযাত্রায়।

এবারের শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়, ‘নির্মল করো, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে।’ রমজান মাস হওয়ায় এবছর সকালে পান্তা-ইলিশের আয়োজন হয়নি।

প্রসঙ্গত, আশির দশকে স্বৈরাচারি এরশাদ সরকারের শাসনামলে সামরিক শাসনের অন্ধকার ঘোচানোর উদ্দেশ্য নিয়ে পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়েছিল। পরবর্তীতে এটিই ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিত হয়।  

গত তিন দশক ধরে প্রতি বছরই পয়লা বৈশাখে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হচ্ছে। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি ২০১৬ সালে ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায়।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগেই বলা হয়েছে, পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। চারুকলা অনুষদের বানানো বৈশাখী মুখোশ হাতে নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে হবে।

সেই সঙ্গে বর্ষবরণের সব আয়োজন এবার বেলা ২টার মধ্যে শেষ করতে বলেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গত মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, “এবার রোজার মধ্যে পহেলা বৈশাখ হবে। তাই দিনের বেলা কোনো খাবার দোকান খোলা থাকবে না। রোজার মাস চলছে, তাই এবার বেলা ২টার মধ্যে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে।”

এবার দুই বছর পর রমনার বটমূলে ফিরেছে ছায়ানটের অনুষ্ঠান। সামাজিক সব অনাচারের বিরুদ্ধে মানুষের মনে শুভবোধ জাগিয়ে তোলার মানস নিয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ বরণ করতে প্রভাতী আয়োজন শুরু করেছে সংগঠনটি।

গত বছরের দুঃসময় কাটিয়ে  নতুন আনন্দে জেগে ওঠেছে বাংলা নববর্ষ। বাংলা ও বাঙালির চেতনাকে মূল ভাবনায় নিয়ে অনুষ্ঠান সাজিয়েছে ছায়ানট।

Link copied!