বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও ব্যক্তিদের মর্যাদাহানি করার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে সাড়ে আটটার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। পরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আনা হয়৷
পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ৩৬ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি 'জেনেটিক রিচমন্ড'-এ অভিযান চালিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
চার ঘণ্টার অভিযানে তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু, বৈদেশিক মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র্যাব। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও টেলিযোগাযোগ আইনে আরও চারটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘হেলেনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মানহানি করেছেন। এছাড়া তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘খ্যাতির আশায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে তিনি সম্মানিত ব্যক্তিদের বিব্রত করতেন। অনৈতিক পন্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে খ্যাতনামা হিসেবে উপস্থাপন করতে চতুরতার আশ্রয় নিতেন তিনি। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তিনি একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতেন। ফেসবুক ব্যবহার করে তিনি সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ ও উত্ত্যক্ত করতেন। পরে ফোন করে তাদের হেয় করতেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন।’
হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি দেওয়া হয়। নামের সঙ্গে লীগ যুক্ত করে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগের অনুমোদনহীন একটি সংগঠনের সভাপতি পদে নাম আসার পর তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে দলটির মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটি।
সম্প্রতি ফেসবুকে বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসে। সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা তিনি অস্বীকার করেছেন।