শাইখুল ইসলাম শহীদ আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে শহীদ করে বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা এবং হেফাজতে ইসলামকে একটি চিহ্নিত মহল তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার পর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভি.আই.পি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা শফী সমর্থিত হেফাজত ইসলামের নেতা ও তার পরিবারের সদস্যরা এ কথা বলেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন হাটহাজারী মাদ্রাসার সাবেক মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুল ইসলাম জাদিদ।
হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের ও উস্কানিদাতাদের গ্রেফতারপূর্বক বিচারকার্য দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করছেন আল্লামা শফী অনুসারীরা।
আল্লামা আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শাইখুল ইসলাম শহীদ আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে শহীদ করে বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা এবং হেফাজতে ইসলামকে একটি চিহ্নিত মহল তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে গভীর ষড়যন্ত্র করছে।
চিহ্নিত চরমপন্থীরা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করে
এসবের নেতৃত্বে মূলত হেফাজতের গুটিকয়েক নেতা এবং চিহ্নিত কিছু চরমপন্থী রয়েছে। হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলনের নামে আল্লামা শফীর রুম ভাংচুর এবং তার ওপর মানসিক চাপ, অসৌজন্যমূলক আচরণ, মেডিসিন নিতে বাধা প্রদান, তার চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটানো- এসবই ছিল তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। হেফাজতের তথাকথিত বর্তমান আহবায়ক জুনায়েদ বাবুনগরী গত ২০২০ সনের ২৩ ডিসেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষকদের সামনে বসিয়ে রেখে বলেছেন, হুজুরের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মিডিয়ায় সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মাদরাসায় কোন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি মিথ্যাচারপূর্ণ ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছেন।
২০১৬ সালে পদত্যাগ করে কিভাবে আবার কমিটি আহবান করে এ প্রশ্ন তুলে এ কমিটিকে চরমপন্থী কমিটি বলে দাবি করেন শফি ভক্তরা
যে যে দাবি করলেন তারা
হেফাজতের সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো-
১. পিবিআই তদন্তের মাধ্যমে আল্লামা শাহ আমদ শফীর ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর’ রহস্য উদঘাটন করে এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
২. তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলা তদন্তপূর্বক অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে।
৩. আল্লামা শফীর পরিবারের সদস্যদের ও তার অনুসারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যারা মামলা তুলে নেয়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. আহমদ শফীর রেখে যাওয়া সব দ্বীনি ও সামাজিক অঙ্গনগুলো থেকে তার বিরোধীদের অপসারণ করতে হবে।
৫. অবিলম্বে দেশের সব হিফজ-মক্তব মাদ্রাসা খুলে দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা আহমদ শফীর শ্যালক মাইনুদ্দিন, ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা আবদুল হামিদ (মধুপুরী পীর) সহ হেফাজতের বিভিন্ন নেতারা উপস্থিত রয়েছেন।