‘শরিফুলের শারীরিক অক্ষমতার কারণেই তাকে খুন করে স্ত্রী’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১৭, ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম

‘শরিফুলের শারীরিক অক্ষমতার কারণেই তাকে খুন করে স্ত্রী’

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের আগনুকালি গ্রামে চাঞ্চল্যকর শরিফুল হত্যার পেছনে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। তারা জানায়, বিয়ের পর থেকেই শরিফুলের শারীরিক অক্ষমতার কারণে অসুখী ছিলেন ফারজানা। আর একারণেই ফারজানা পরিকল্পিতভাবে স্বামী শরিফুলকে হাত-পা বেঁধে হত্যা করেন।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেড় মাস আগে শাহজাদপুরের আগনুকালি গ্রামের মৃত আবু সামার ছেলে শরিফুল (২৫) একই উপজেলার চর বেতকান্দি গ্রামের ফখরুল ইসলামের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে ফারজানা খাতুনকে (১৮) বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর থেকেই তার শারীরিক চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় এনিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। স্বামীর অক্ষমতার বিষয়টি ফারজানা তার স্বজনদের জানিয়ে বিচ্ছেদের কথা বলেন। এতে তারা সায় না দিয়ে ফারজানাকে গালমন্দ করতেন। তাই পরিকল্পিতভাবে শরিফুলকে হাত-পা বেঁধে হত্যার পর করতোয়ায় ফেলে দেন তিনি।

সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, শরিফুলের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার তিন দিন পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) আসামি ফারজানা আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে এ বক্তব্য দিয়েছেন।  

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ৯ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ১১টায় শ্বশুরবাড়িতে যান শরিফুল। ফারজানা ওইদিন রাত তিনটার দিকে শরিফুলকে প্রতারণার মাধ্যমে নদীর পাড়ে নিয়ে যান এবং কবিরাজের বরাত দিয়ে বলেন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নদীর স্রোতের পানি তুলে পান করলে শারীরিক অক্ষমতা দূর হবে। শরিফুল তাতে সায় দিলে তার পরনের লুঙ্গি ছিঁড়ে হাত ও পা বেঁধে দেন ফারজানা। এরপর একটি প্লাস্টিকের বোতল হাতে নিয়ে নদীর স্রোতের পানি তুলতে গেলে ফারজানা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং ঘাড় চেপে ধরেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ফারজানার হাতে কামড় বসিয়ে দেন শরিফুল। এ সময় ফারজানা ক্ষিপ্ত হয়ে শরিফুলের ঘাড় ভেঙে দেন।

পরে শরিফুলের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ফারজানা তার দেহ পাশে থাকা শ্যালো নৌকার নিচে ঢুকিয়ে দেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার চার দিন পর শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় পার্শ্ববর্তী শিবরামপুর গ্রামের করতোয়া নদীর পোলঘাটে মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করার পর শরিফুলের মা ও পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেন।

ওইদিনই স্ত্রী ফারজানাসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শরিফুলের  মা সূর্য বানু বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামে মামলা দায়ের করেন।

Link copied!