বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব নবায়ন না করায় বন্ধ হয়ে গেছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮টি বিও হিসাব। আর চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বিও হিসাব কমেছে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৮২৫টি। সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) আবেদনে কড়াকড়ি করায় গত জুলাইয়ে পুঁজিবাজার ছেড়েছে প্রায় ছয় লাখ বিনিয়োগকারী।
বিও হিসাব এখন প্রায় ২০ লাখ
সিডিবিএল সূত্র জানায়, গত জুলাই মাসের শুরুতে পুঁজিবাজারে বিও হিসাব ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩১টি, মাসের শেষ দিন এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩টিতে। পুরুষদের বিও হিসাব কমেছে ৪ লাখ ৭ হাজার ৯০৭টি এবং নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯০১টি।
সূত্র জানায়, জুলাই মাসের শুরুতে পুরুষ বিও হিসাব ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৯টি থাকলেও আগস্টের শুরুতে তা নেমে এসেছে ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৪২টিতে। একই সময়ে নারী বিনিয়োগকারী ৬ লাখ ৫২ হাজার ২৭৫টি থেকে কমে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৭৪টি নেমে আসে। অন্যদিকে জুলাই মাসের শুরুতে কোম্পানি বিও হিসাব ১৪ হাজার ৭০৭টি থাকলেও মাসের শেষে তা ২৯০টি কমে ১৪ হাজার ৪১৭টিতে নেমে আসে।
নতুন নীতিমালায় পুঁজিবাজার
সূত্র জানায়, আইপিও‘র মাধ্যমে শেয়ারের আবেদন করতে নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এই নীতিমালার ফলে আইপিওতে আসা কোম্পানির শেয়ারের আনুপাতিক হারে বরাদ্দ দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আইপিওতে আবেদন করা সবাই আনুপাতিক হারে শেয়ার পাবেন। তবে আবেদনের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। এছাড়া আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা বা তার গুণিতক আবেদন করতে হবে। বিএসইসির এই সিদ্ধান্ত সম্প্রতি কার্যকর হওয়ায় পুঁজিবাজারের অনেক বিও হিসাব থেকে আইপিও‘র আবেদন করার সুযোগ না থাকায় হিসাবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
নিয়মিত বিনিয়োগকারীরা সুফল পাবে
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি মো. শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ কেবল প্রাইমারি শেয়ারে (আইপিও) আবেদনের জন্য বিও হিসাব খুলে। এসবি বিও হিসাব থেকে আইপিও‘র জন্য আবেদন করা হতো। আইপিও‘তে শেয়ার পেলে কয়েকদিনের মধ্যেই তা বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা নিয়ে সটকে পড়তো।
তিনি বলেন, বিএসইসির নতুন নিয়ম অনুসারে আইপিও’র জন্য কোনো বিও হিসাব থেকে আবেদন করতে হলে, ওই বিও হিসাবে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। এসব শর্ত পূরণ করা কঠিন হওয়ায় শুধু আইপিও‘র আবেদন করার জন্য খোলা বিও হিসাবগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পুঁজিবাজারে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পরবে না। বরং বাজারের নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো হয়েছে।