রাবি ক্যম্পাসে ছিনতাই, পুলিশের বিরুদ্ধে ‘সহযোগিতার’ অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি

জুন ২৭, ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম

রাবি ক্যম্পাসে ছিনতাই, পুলিশের বিরুদ্ধে ‘সহযোগিতার’ অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের পুলিশের ‘সহযোগিতার’ অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কর্তব্যরত ৩ পুলিশ সদস্যের কাছে সাহায্য চাইলেও তারা এগিয়ে আসেননি।

আপনাদের প্রটেকশন দিলে আমাদের প্রটেকশন কে দেবে?

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ওই তিন পুলিশ সদস্যের ‘সহযোগিতায়’ ছিনতাই করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার রাতেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক হওয়া ছিনতাইকারীর নাম রাহাত। নগরীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে তার বাড়ি। অন্যদিকে ভুক্তভোগী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. জিহাদ মোল্লা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে চারুকলার সামনের রাস্তা দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার এক সহপাঠী। রেললাইন পার হয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে এলে অপরিচিত একজন লোক তাদের পথরোধ করেন। এ সময় তিনি (ছিনতাইকারী) ছুরি বের করে তাদের ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন এবং মোবাইল ও মানিব্যাগ বের করার জন্য দাবি। তখন তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনতাই করেন ওই ব্যক্তি।

ছিনতাইয়ের পর ওই শিক্ষার্থী চিৎকার করলে তার হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী। এ সময় চারুকলা সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়িতে সাহায্যের আবেদন করলে তারা অপারগতা প্রকাশ করে। পরে ঘটনাস্থলে আসে জিহাদ মোল্লার সহপাঠীরা। তাদের অভিযোগ, ছিনতাইয়ের সঙ্গে পুলিশও জড়িত। পরে ওই ৩ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা উচ্চবাচ্য করলে তারা (পুলিশ) গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষুব্ধ হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ভুক্তভোগী জিহাদ মোল্লা বলেন, “রাত সাড়ে আটটার দিকে আমার এক বান্ধবীকে তার মেসে এগিয়ে দিতে চারুকলার রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। এমন সময় একজন ছিনতাইকারী আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এবং আমার গলায় ছুরি ধরে আমার ও আমার বান্ধবীর কাছে থাকা অর্থ এবং স্টুডেন্ট আইডি কার্ড নিয়ে যায়। আমি চিৎকার করে উঠলে সে আমার হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়।”

তিনি আরও বলেন, “চারুকলা সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়িতে সাহায্যের আবেদন করলে তারা অপারগতা প্রকাশ করে। এসময় পুলিশ বলে, আপনাদের প্রটেকশন দিলে আমাদের প্রটেকশন কে দেবে? এই কাজ ওই ৩ পুলিশ সদস্যের সহযোগিতায়ই হয়েছে। আমি এর একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “গতকাল (বুধবার) রাতে ওই ছিনতাইয়ের ঘটনার পর আমরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছি। সেইসাথে দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করা ওই ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।”

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, “ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা চারুকলায় যাই। এসময় শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এ সময় তাদের শান্ত করি। পরবর্তীতে পুলিশ কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলি। এরপর মাত্র ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আসামিকে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করেছি।”

সার্বিক বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবাররক পারভেজ বলেন, “এ ঘটনায় গতকাল (বুধবার) রাত ১২টার দিকে একটা মামলা হয়েছে। রাত দুইটার দিকে আমরা তাকে আটক করেছি। দায়িত্বে অবহেলা করা পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!