জুন ৪, ২০২৪, ১১:১৭ এএম
নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “এই সরকার নিরাপদ নৌযান ও দূষণমুক্ত নদী গড়ার লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে, বলেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।”
দুর্ঘটনামুক্ত নৌ-চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রতি বছরের মত এ বছরও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে “নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২৪’’ পালিত হচ্ছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রাখবে অবদান’।
মঙ্গলবার (৪ জুন) রাজধানীর শিশু একাডেমী মিলনায়তনে নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২৪’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, “দেশপ্রেম না থাকলে, দেশের জন্য কাজ না করলে এগিয়ে যাওয়া যায় না। ‘৭৫’র ১৫ আগস্টের পর সবকিছু হারিয়ে যেতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একটি প্রদেশকে (স্বাধীন বাংলাদেশকে) রাষ্ট্র মর্যাদা, শাসন ব্যবস্থা দিয়েছেন। দারিদ্র্য পীড়িত দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছেন। জিডিপিতে ৯ভাগ অগ্রগতি ছিল। লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা হয়েছে।”
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কলঙ্কজনক অধ্যায়ের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “এরপর কি পেলাম? ‘৭৫ পরবর্তী সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙ্গে ফেলেছিল। ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিল। ১৫ আগস্ট এর পর বুড়িগঙ্গাসহ নদনদী খালবিল সবকিছু দূষিত করা হয়েছে। মানুষকে স্বাধীনতার সুখ দিতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশকে তুলে দেওয়া হয়েছিল অপরাধীদের হাতে। ‘৭৫’র পর নদ নদী নিয়ে কোনও সরকার বা রাষ্ট্র প্রধান কথা বলেনি।”
বাংলাদেশের নদী ও নৌপথের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর নাব্যতা, দখল ও দূষণমুক্ত রাখার কথা বলেছেন। ২০১৯ সালে নদী তীরের অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কোভিডের কারণে এগিয়ে যেতে পারিনি। ম্যানমেইড বর্জ্য, শিল্প-কারখানার বর্জ্য দূষণমুক্ত করতে কাজ করছি। দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্মত জাহাজ তৈরি হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন “সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশ ভিজিট করে গেছেন। তিনি অভিভূত হয়েছেন। বাংলাদেশের আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছেন তিনি- এটা বড় অর্জন।”
নিরাপদ নৌ-পথ তৈরিতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “২০১৯ সালে নদী দখলমুক্তের অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস দিয়েছেন। আমরা সফল হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নদী নিয়ে ভাবেন। নদীর প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলেন। যদি নদী নালা শুকিয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশের প্রাণ থেমে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “নৌপথ খননে বঙ্গবন্ধুর সময়ে সংগৃহীত সাতটি ড্রেজারের পর ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোনও সরকার ড্রেজার সংগ্রহ করেনি। আওয়ামী লীগ গত ৩ মেয়াদে ৪০টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে। আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। নদী দূষণমুক্ত করতে গ্র্যাপ ড্রেজার, হোপার ড্রেজার সংগ্রহের টেন্ডার চলমান রয়েছে। সচেতনতা তৈরি করছি।”
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আমাদের দায়িত্ব স্বাধীনতার সুখ পৌঁছে দেওয়া। তা না হলে- স্বাধীনতা বিরোধীরা বলতে পারে ‘৭১’এ ভুল হয়েছে। আমরা সেটি হতে দেবো না। স্বাধীনতার সুখ পাচ্ছি। মানুষ অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসা পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন। আমরা অঙ্গীকার করছি, ২০৪১ সালের আগেই দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌ-যান করতে পারি তবেই এই দিবস পালনের সার্থকতা হবে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ এখনও পৌঁছতে পারেনি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী কিছু ঘাটতি ও দুর্বলতা সত্ত্বেও ‘দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।”