দেশের ইতিহাসে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে চলতি বছরের ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষ করে ঢাকার অবস্থা হয়ে উঠেছে ভয়াবহ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এলাকা হিসেবে গত মাসের (আগস্ট) শেষ সপ্তাহে রাজধানীর ১৫টি এলাকার নাম উঠে এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, সংক্রমিত ১৫টি এলাকার মধ্যে ১১টিই আবার ঢাকা উত্তর সিটির। এরমধ্যে শীর্ষে রাজধানীর পল্লবী এলাকা। উত্তরা দ্বিতীয় এবং বাড্ডা তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
এ ছাড়া ক্যান্টনমেন্ট, দক্ষিণখান, মিরপুর, গুলশান, রামপুরা, কাফরুল, খিলক্ষেত, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ ও খিলগাঁও এলাকায় নামও উঠে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর ২ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ লাখ ৮ হাজার ৮৮৪ জন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮৪ জন। মারা গেছেন ১ হাজার ১৭ জন। এরমধ্যে ঢাকা সিটির ৬৫৫ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরের ৩৬২ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী নানা উদ্যোগ নিলেও কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ২৮১ জন।