জানুয়ারি ১৭, ২০২৪, ১২:০৫ পিএম
বাংলাদেশের মতো নিম্ন আয়ের দেশের সব মানুষ প্রতিদিন প্রোটিনের বন্দোবস্ত করতে পারে না। এদেশের মানুষের কাছে ভাত জনপ্রিয় হওয়ায় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ ধান দীর্ঘদিন ধরে উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। তারই অংশ হিসাবে ব্রি ধান ১০৭ ও ১০৮ নামের নতুন দুটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। অন্য ধানের তুলনায় এই দুটি ধানে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে প্রশ্ন হলো- এই চাল কি মাছ, মাংসের মত প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে?
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) নতুন উদ্ভাবিত দু`টি জাতের ধানের একটি হলো ব্রি ধান ১০৭ ও অন্যটির নাম–ব্রি ধান ১০৮।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, উভয় প্রজাতির ধান যেমন উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ, ঠিক তেমনি এগুলো উচ্চফলনশীলও। সেইসাথে, এই ধান থেকে চিকন এবং ঝরঝরে চাল হওয়ায় এগুলো বিদেশে রপ্তানিযোগ্য।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবদুল কাদের জানিয়েছেন, সাধারণ চালে ৬ থেকে ৮ শতাংশ প্রোটিন এমনিতেই থাকে। কিন্তু এই ধানে ১০ দশমিক ০২ শতাংশ প্রোটিন আছে।
অন্যদিকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম মাসুদুজ্জামানের নেতৃত্বে ‘ব্রি ধান ১০৮’ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি তিনবেলা এই চালের ভাত খায়, তবে এখান থেকে তার দেহের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে।’
তবে পুষ্টি বিজ্ঞানীরা বলছেন, চালের মধ্যে প্রোটিন থাকলেও তা আমিষজাত প্রোটিনের অভাব পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বিবিসিকে বলেন, বাড়ন্ত বয়সের বাচ্চাদের গ্রোথের জন্য প্ল্যান্ট প্রোটিন (উদ্ভিজ আমিষ) পর্যাপ্ত না। বাচ্চাকে এনিমেল প্রোটিন (প্রাণীজ আমিষ) খেতেই হবে। প্রাণীজ আমিষ প্রাণীজ আমিষ-ই, উদ্ভিজ আমিষ উদ্ভিজ আমিষ-ই। পাশাপাশি চাল থেকে প্রাপ্ত আমিষ কখনো উদ্ভিজ আমিষের ‘সাবস্টিটিউট’ হতে পারে না।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এবছর বীজ উৎপাদন করা হলে ২০২৫ সালের মে মাসের পর এই দুই জাতের নতুন ধানের চাল বাজারে আসবে।