একাকিত্বকে ‘জনস্বাস্থ্য হুমকি’ বলে ঘোষণা করল : ডব্লিউএইচও

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ২২, ২০২৩, ০৮:০৮ এএম

একাকিত্বকে ‘জনস্বাস্থ্য হুমকি’ বলে ঘোষণা করল : ডব্লিউএইচও

ছবি: সংগৃহীত

একাকিত্বকে বৈশ্বিক ‘জনস্বাস্থ্য হুমকি ’বলে ঘোষণা করেছে  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) । কারন মানুষ এখন সামাজিক, আর্থিকসহ নানা কারণেই  একাকিত্ব বা নিঃসঙ্গতায় ভুগছে। এই একাকিত্ব বা নিঃসঙ্গতা কে যে নামেই বলি না কেন,কিন্তু বিষয়টি এখন বর্তমান সময়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে। 

বিষয়টি এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে,এটা মৃত্যুর প্রভাবক হিসেবে একাকিত্ব দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান কাজ করে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছে।

একাকিত্বের বিষয়ে কাজ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি কমিশন গঠন করেছিল, যাতে নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল ডা. বিবেক মূর্তি, আফ্রিকান ইউনিয়নের যুববিষয়ক দূত শিদো এমপেম্বা, ভানুয়াতুন জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী রালফ রেজেনভানু, জাপানের একাকিত্ববিষয়ক মন্ত্রী আয়ুকো কাতোসহ সব মিলিয়ে কমিশনে ১১ জন সদস্য ছিলেন।

একাকিত্বকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য হুমকি হিসেবে ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আফ্রিকান ইউনিয়নের যুববিষয়ক দূত শিদো এমপেম্বা। তিনি বলেন, “এটি (একাকিত্ব) বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সর্বস্তরের বিশেষ করে স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ ও সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে এবং এগুলোকে বাধাগ্রস্ত করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার জন্য কোনো বয়স বা নির্দিষ্ট কোনো সীমারেখা নেই।”

সম্প্রতি প্রকাশিত ‘আওয়ার এপিডেমিক অব লোনলিনেস অ্যান্ড আইসোলেশন’শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছে, নিঃসঙ্গতা ব্যক্তি ও সমাজ উভয় ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমনকি এটি অকালমৃত্যুর জন্যও দায়ী। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, একাকিত্ব শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। এর ফলে বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও আত্মহত্যার প্রবণতার মতো মানসিক সমস্যা ছাড়াও হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, ডিমেনশিয়া ও অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে পারে। পাশাপাশি একাকিত্বের মধ্য দিয়ে সামাজিক বিচ্ছিন্নতাও তৈরি হতে পারে মানুষের মধ্যে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছ মৃত্যুর প্রভাবক হিসেবে একাকিত্ব দিনে ১৫টি সিগারেট খাওয়ার সমান কাজ করে। এমনকি এটি স্থূলতা ও অক্ষমতার ক্ষেত্রে সিগারেটের চেয়েও বেশি ভূমিকা রাখে। সামাজিক থেকে বিচ্ছিন্নতার ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের স্কুল, কর্মক্ষেত্র এবং নাগরিক সংস্থাগুলোতে অনুভূত হতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষমতা, উৎপাদনশীলতা ও ব্যস্ততা হ্রাস পেতে পারে।

ফরচুন ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সামাজিক সংযোগের ওপর একটি কমিশন চালু করবে। বুধবার (১৫ নভেম্বর ) একাকিত্বের মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে এই প্রথম উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস।

Link copied!