এপ্রিল ৭, ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম
মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রাদেশিক কর্মকর্তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০টি এলাকাজুড়ে প্রায় ৩ হাজার ৯৯৮ জন মিয়ানমারের বাসিন্দা জড়ো হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা থাই কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়।
থাই কর্মকর্তারা বলেছেন, নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশের সীমান্তবর্তী কারেন রাজ্যের মায়াওয়াদি শহরে হাজার হাজার মিয়ানমারের বাসিন্দা জড়ো হচ্ছেন।
থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম খাওসোদ ও বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (কেএনএলএ) সশস্ত্র যোদ্ধারা একটি সীমান্তরক্ষী চৌকিতে হামলা করলে দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল থেকে অনেক মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং কেউ কেউ এখনো মিয়ানমারের পাশে অপেক্ষা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দাতব্য কর্মী বলেছেন, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পানযোগ্য পানি নেই। টয়লেটের ব্যবস্থা নেই।
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কেএনএলএ অভ্যুত্থানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সাথে যোগ দিয়েছে। তারা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই লড়াই করছে। অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সামরিক জান্তারা এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২১২ জনকে হত্যা করেছে এবং ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে কারাবন্দী করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিমান হামলার অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, বেসামরিক মানুষদের ওপরে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। অনেক গ্রাম সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এক গ্রামে বোমা হামলায় শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন।
‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে দাবি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তারা বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর জন্য অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদেরই দায়ী করেছে।
২০২১ সালের সালের ফেব্রুয়ারিতে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর মিয়ানমারে ব্যাপক বিক্ষোভ হয় ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জন্ম হয়।