ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩, ১০:২০ পিএম
সবজির আমদানি কমে যাওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের সুপারশপগুলোতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্বস্তিতে নেই দেশটির জনগণ। দেশটির সুপার শপগুলোতে ৬টি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪ পাউন্ডে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে পাঁচশ টাকা। তবে ওই চড়া দামেও চাহিদা মতো মিলছে না ডিম।
শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি সবজিও প্রয়োজন মতো কেনা যাচ্ছে না। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে টমেটে। সুপার মার্কেটগুলিতে মিলছে না এই সবজি। শুধু টম্যাটো নয়, শসা, লেটুস কিংবা গোলমরিচের একই অবস্থা।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের চারটি সুপার মার্কেট চেইনশপ কোম্পানি টমেটো, শসা ও মরিচ বিক্রিতে রেশনিং চালু করেছে। এসব কোম্পানির ধ্যে রয়েছে টেসকো, আলডি, আসদা ও মরিসন্স। রেশনিংয়ের শর্ত অনুযায়ি, এসব সুপার শপে একজন ক্রেতা তিনটির বেশি টমেটো, মরিচ ও শসা কিনতে পারছেন না।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,যুক্তরাজ্যে টেসকো, আসডা, মরিসনস ও আলডির মতো বড় বড় সুপারশপগুলো নির্দিষ্ট কিছু সবজি ও ফল কেনার ক্ষেত্রে সংখ্যা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এর মধ্যে টেসকো এবং আলডি ঘোষণা করেছে, একজন ক্রেতা একবারে তিনটির বেশি টমেটো, মরিচ ও শসা কিনতে পারবেন না। একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে আসডা কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটিও বলছে, তিনটির বেশি লেটুস, সালাদ ব্যাগ, ব্রকলি, ফুলকপি ও রাস্পবেরি কিনতে পারেন না কোনো ক্রেতা। অন্যদিকে, মরিসনস কর্তৃপক্ষ বলেছে, একজন ক্রেতা দুটির বেশি টমেটো, শসা, লেটুস কিংবা গোলমরিচ কিনতে পারবেন না।
কেন এত দাম বাড়ছে লন্ডনে?
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়,ব্রিটেনে সবজির প্রধান সরবরাহ হচ্ছে দক্ষিণ ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলি। সবজি আসে স্পেন ও মরক্কো থেকেও। কিন্তু ওই দেশগুলির কৃষকদের সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের দামও। ফলে চাহিদা অনুযায়ী ফলন ফলাতে পারছে না স্থানীয় কৃষকরা। আর তার প্রভাব পড়েছে ব্রিটেনের মতো দেশগুলিতে।
পল ক্রেন, লন্ডনের বিখ্যাত বরো মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী। দক্ষিণ লন্ডনের বাজারে ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করা এই ব্যবসায়ী ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, তার শিল্পটি গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। এই সংকটটি গত ছয় বা সাত সপ্তাহ ধরে হয়েছে। এমনকি সুপারশপগুলোতে প্রায় সব ধরনের সবজির দামও বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যের বাজার বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, যোগান কম থাকার মূল কারণ হচ্ছে স্পেন ও মরক্কোর আবহাওয়া। বছরের এই সময় মূলত ওই দুটি দেশ থেকে টম্যাটো,শসার মতো সবজি আসে যুক্তরাজ্যে। আগে ফোন করলেই ইউরোপ থেকে সবজি আসত। তবে বেক্সিটের কারণে তাও এখন সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান বিশ্লেষকরা।