২০২২-২৩ সালে সত্য অনুসন্ধানের জন্য কাজ করতে গিয়ে ১৬২ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা আগের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। এই বৃদ্ধিকে "উদ্বেগজনক" হিসেবে উল্লেখ করেছে ইউনেস্কো।
শনিবার (০২ নভেম্বর) জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো এক প্রতিবেদনে বলেছে, এসব মামলার অধিকাংশেরই বিচার এবং দোষীদের শাস্তি হয়নি।
ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে, সত্য অনুসন্ধানের জন্য কাজ করতে গিয়ে প্রতি চারদিনে একজন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। তিনি দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন যে, “এই অপরাধগুলো যাতে কখনোই বিচারহীন না থাকে তা নিশ্চিত করতে আরো উদ্যোগী হতে হবে।”
এই দুই বছরে লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে সর্বাধিক সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটে, যেখানে ৬১ জন নিহত হন। অন্যদিকে, উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপ ছিল সাংবাদিকদের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ, যেখানে ছয়টি হত্যার ঘটনা ঘটে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২৩ সালে সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে সাংবাদিক হত্যার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই বছরে মোট ৪৪ জন সাংবাদিক নিহত হন, যা মোট প্রাণহানির ৫৯ শতাংশ। এই সংখ্যা ২০১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো এতো বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২২-২৩ সালে নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে অন্তত ১৪ জন নারী আছেন, যা মোট নিহতের নয় শতাংশ। এদের পাঁচজনের বয়স ১৫-২৪ বছরের মধ্যে ছিল। ইউনেস্কোর তথ্যমতে, ২০০৬ সাল থেকে সাংবাদিক হত্যার ৮৫ শতাংশ মামলা এখনো বিচার হয়নি। যদিও ২০১৮ সালে বিচারহীনতার হার ছিল ৮৯ শতাংশ এবং ২০১২ সালে ৯৫ শতাংশ। বিচার প্রক্রিয়ার এই ধীর গতি উদ্বেগের বিষয়।
ইউনেস্কো সাংবাদিক হত্যা সংক্রান্ত ৭৫টি দেশকে বিচারাধীন মামলার আপডেট দিতে বললে, ১৭টি দেশ কোনো সাড়া দেয়নি। শুধুমাত্র নয়টি দেশ অনুরোধের বিপরীতে তথ্য দিয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সেসব সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়েছে, সেগুলোতেও গড়ে চার বছর সময় লেগেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “বিচার বিলম্ব হলে, তার গ্রহণযোগ্যতা কমে।”