নেপালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ১৪ বিক্ষোভকারী, আন্দোলনে সমর্থন তারকাদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম

নেপালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ১৪ বিক্ষোভকারী, আন্দোলনে সমর্থন তারকাদের

ছবি: সংগৃহীত

সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে নেপালিরা। আজ সোমবার কাঠমান্ডুতে এই বিক্ষোভ রুখতে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতে এরই মধ্যে ১৪ জন নিহত হয়েছে বলে দেশটির দুটি হাসপাতালের বরাতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালায়ান পোস্ট।

হিমালায়ান পোস্ট বলছে, সোমবার কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরে চলমান বিক্ষোভে অন্তত আটজন ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের মধ্যে পাঁচজন ট্রমা সেন্টারে, দুজন সিভিল হাসপাতালে এবং একজন সিনামঙ্গলের কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে মারা গেছে। কিছু ভুক্তভোগীর পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

এ ছাড়া শত শত বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছে এবং রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিচ্ছেন নেপালের তারকারা। এদের মধ্যে রয়েছেন তারকা অভিনেতা মদন কৃষ্ণা ও হরি বানশা আচার্য।

প্রাথমিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন ঘোষিত হলেও বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল পার্লামেন্টের প্রাঙ্গণে হামলা চালালে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে পরিস্থিতি সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে। কর্তৃপক্ষ টিয়ার গ্যাস, জলকামান, রাবার বুলেট এবং ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।

সংঘর্ষের পর কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন অফিস বানেস্বর, সিংহাসন, নারায়ণহিতি এবং আশপাশের স্পর্শকাতর সরকারি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া আইডি খুলে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে দাবি করে এসব মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে নেপালের সরকার। দেশটির সরকার বলছে, এসব আইডি ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর পাশাপাশি হিংসাত্মক মন্তব্য প্রচার করা হয়। এতে বেড়ে যাচ্ছে অপরাধ। এ কারণে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

এরপর বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে পড়ে জনতা। তারা সবাই পার্লামেন্টের আশপাশে জড়ো হতে থাকে। তারা যাতে পার্লামেন্টের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সেখানে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। সেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে তরুণ বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু তাদের পার্লামেন্টে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। এরপর সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। 

কাঠমান্ডু ডিস্ট্রিক্ট অফিসের মুখপাত্র মুক্তিরাম রিজাল রয়টার্সকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা কারফিউ জারি করেছি। আজ রাত ১০টা পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে। বিক্ষোভকারীরা সহিংস হয়ে যাওয়ার কারণে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি আমরা। ওয়াটার ক্যানন, ব্যাটন ও রাবার বুলেট ব্যবহার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে আজ সোমবার সকালে হাজারো জনতা রাস্তায় নেমে পড়ে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ, কারও গায়ে তখনো ছিল স্কুল কিংবা কলেজের ইউনিফর্ম। আর হাতে ছিল নেপালের জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন প্রতিবাদমূলক প্ল্যাকার্ড। এসব প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘দুর্নীতি বন্ধ করো, সোশ্যাল মিডিয়া নয়’ ও ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণেরা’।

Link copied!