ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে স্পেনের ভূখণ্ডে ঢুকতে গিয়ে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে অন্তত ৯৫১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর প্রাণ গেছে
লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নারী–শিশুসহ অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা (আইওএম) আজ রোববার এ কথা জানিয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে আইওএমের লিবিয়া কার্যালয় বলছে, নৌকাটিতে ৮৬ জনের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থী ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, বড় বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায় এবং ঢেউয়ের কারণে বেশির ভাগ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।
লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলের জুওয়ারা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর নৌকাটি দুর্ঘটনায় পড়ে। পরে ২৫ জনের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের লিবিয়ার আটককেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উন্নত জীবনের আশায় প্রতিবছর বহু মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ সাগরপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ইতালি হয়ে ইউরোপে যাওয়ার জন্য লিবিয়া ও তিউনিসিয়ার বন্দরগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা।
আইওএম জানিয়েছে, যে নৌকা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে, তার বেশির ভাগ মানুষই ছিলেন নাইজেরিয়া, গাম্বিয়াসহ আফ্রিকার অন্যান্য দেশের নাগরিক।
উদ্ধার ব্যক্তিদের আইওএমের সদস্যরা ‘প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা’ দিয়েছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো।
আইওএমের মুখপাত্র ফ্লাভিও দি গিয়াকোমো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছেন, এ বছর ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথে ২ হাজার ২৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। তিনি লিখছেন, নাটকীয় মাত্রায় বড় এ সংখ্যা বলছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাগরে প্রাণ বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেই।
চলতি বছরের ১৪ জুন লিবিয়ার আদ্রিয়ানা থেকে ইতালি যাওয়ার পথে মাছ ধরার একটি নৌকা দক্ষিণ-পশ্চিম গ্রিসের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ডুবে যায়। নৌকাটিতে ৭৫০ অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন।
ওই দুর্ঘটনার পর ১০৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁরা জানান, নৌকাটিতে মূলত সিরিয়া, পাকিস্তান ও মিসরের নাগরিক ছিলেন। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার পর মাত্র ৮২টি মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুসারে, তিউনিসিয়া ও লিবিয়া থেকে এ বছর ১ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে পা রেখেছেন।