গাজার আল-শিফা হাসপাতাল এখন “মৃত্যুকূপ” : ডব্লিউএইচও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নভেম্বর ২০, ২০২৩, ০৮:৩২ এএম

গাজার আল-শিফা হাসপাতাল  এখন “মৃত্যুকূপ” : ডব্লিউএইচও

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গাজার আল-শিফা হাসপাতালকে ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে । শনিবার (১৮ নভেম্বর ) বৈশ্বিক এই সংস্থাটির নেতৃত্বে জাতিসংঘের কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিদল গাজার সবচেয়ে বড় এই হাসপাতাল ঘুরে এই আখ্যা দেন। 

এই দল হাসপাতালে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় অতিবাহিত করেন। তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এবং ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী  আল-শিফা হাসপাতালে অবস্থান করা প্রায় আড়াই হাজার লোককে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও তারা সেখানে অবস্থান করছে। প্রায় ২৫ স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৩২টি নবজাতকসহ ২৯১ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল বলেছে, আল-শিফা হাসপাতালের প্রবেশমুখে গণকবর এবং কামানের গোলাবর্ষণ ও গুলির প্রমাণ দেখেছে তারা।

প্রতিনিধিদল আরও জানিয়েছে, দু-তিন দিন ধরে বেশ কয়েকজন রোগী কিংবা আহত ব্যক্তি মারা যায় সেখানে। মূলত ইসরায়েলের হামলা ও সামরিক অভিযানের জের ধরেই হাসপাতালটিতে চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।  এতে  এ অবস্থায় হাসপাতালটিতে অবস্থানরত বাকি স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও তাঁদের স্বজনদের শিগগিরই স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছে ডব্লিউএইচও। 

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী রোগীদের স্থানান্তর করতে বলেছে। আর ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর ভাষ্য হলো, হাসপাতালের পরিচালকই রোগীদের সরিয়ে নিতে চান। এ নিয়ে হাসপাতাল থেকে রোগীদের স্থানান্তর করা নিয়ে পাল্টাপাল্টি কথা শোনা গেছে।

৫ হাজারের বেশি শিশু এবং সাড়ে ৩ হাজারের বেশি  নারীসহ  অন্তত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় প্রাণ হারিয়েছে । রবিবার (১৯ নভেম্বর )  সন্ধ্যায় গাজা প্রশাসনের জনসংযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে গত ৭ অক্টোবর থেকে।

গাজা জনসংযোগ বিভাগের তথ্য অনুসারে, এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০ হাজার গাজাবাসী। আহতদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই নারী ও শিশু। 

এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে তারা সবাই ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৮৩টি মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে এবং ১৬৬টি মসজিদ তাদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সময়ে তিনটি গির্জাতেও হামলা চালানো হয়েছে। গাজার ২৫টি হাসপাতাল ও ৫২টি চিকিৎসাকেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৩ হাজার আবাসন ইউনিট পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ২ লাখ ২৫ হাজার ইউনিট কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই হিসেবে গাজা উপত্যকার মোট আবাসন ইউনিটের অন্তত ৬৬ শতাংশ ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Link copied!