ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনের পর সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। তবে তথাকথিত ‘চরমপন্থিদের’ ঠেকাতে ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও সংঘাত অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
সিরিয়ায় তুরস্কের সমর্থিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মদতপুষ্ট বাহিনীর সংঘর্ষ হচ্ছে। কুর্দদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পাচ্ছে। এই বাহিনীর নেতৃত্বে আছে পিপলস প্রোটেকশন গ্রুপ (ওয়াইপিজি)। তুরস্ক মনে করে, ওয়াইপিজি হলো কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সঙ্গে যুক্ত সংগঠন।
এরই মধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে বলা হয়েছে, সিরিয়ার পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যাতে একযোগে কাজ করে সেই বিষয়ে জোর দিয়েছেন দুই নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক যাতে সিরিয়ার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করে তার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
তুরস্কে যাওয়ার আগে ব্লিংকেন বলেছেন, ``পিকেকে হলো তুরস্কের বিপদের কারণ। তবে একইসঙ্গে আমরা সিরিয়ার ভিতরে বিরোধ এড়াতে চাই। আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার মসৃনভাবে গঠিত হোক এবং তারা ভালোভাবে কাজ করুক।"
ব্লিংকেনের সঙ্গে জর্ডনের রাজার আলোচনা
বৃহস্পতিবার জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ব্লিংকেন। সেখানে তারা সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন। দুজনেই সিরিয়াকে সুরক্ষিত রাখার উপর জোর দিয়েছেন।
ব্লিংকেনের প্রতিশ্রুতি, ``এই পরিবর্তনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র জর্ডন-সহ সিরিয়ার অন্য প্রতিবেশী দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।``
ব্লিংকেন বলেছেন, ``সিরিয়া নিয়ে অনেকের সত্যিকারের স্বার্থ আছে। এখন নতুন করে যাতে কোনো সংঘাত না হয়, সেটা দেখা খুবই জরুরি।`` ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুরসঙ্গে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সাম্প্রতিক আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ব্লিংকেন বলেছেন, ``নেতানিয়াহুর মত হলো, সিরিয়ায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বন্ধ করা দরকার। সিরিয়ার সেনা যে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ফেলে রেখে গেছে, সেগুলি যেন ভুল মানুষের হাতে না পরে।``
জর্ডনের তরফে জানানো হয়েছে, ``রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, জর্ডন সিরিয়ার মানুষের পছন্দকে সম্মান করে। সিরিয়া ও তাদের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এটাও বলেছেন, গাজায় সম্পূর্ণ শান্তি আনাটা খুবই জরুরি।``
জর্ডনে আলোচনা হবে
এই সপ্তাহান্তে আরব ও পশ্চিমা দুনিয়ার অনেক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্ডনে এসে সিরিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন।
সৌদি আরব, ইরাক, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরব লিগের প্রধান শনিবার এই আলোচনায় যোগ দেবেন। তুরস্ক ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও সেখানে থাকবেন।
সিরিয়ার ভবিষ্যৎ ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়টি নিয়ে কথা হবে।
শলৎসের ফোনে কথা
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ফোনে জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
শলৎস মনে করেন, সিরিয়ায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সবাইকে নিয়ে চলা উচিত। দুই নেতাই জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার উপরও জোর দিয়েছেন।