গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, ফের ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ১১:২৫ এএম

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, ফের ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ‘তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলা একটি প্রস্তাবে বৃহস্পতিবার ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল লিখেছে, এ সিদ্ধান্তে ওয়াশিংটনের ইসরায়েলপন্থি অবস্থানের ধারাবাহিকতা প্রতিফলিত হয়েছে। যদিও যুদ্ধ বন্ধের দাবি বিশ্বজুড়ে ক্রমাগত জোরালো হচ্ছে।

প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট পড়ে ১৪টি, কেবল যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিপক্ষে।

নিরাপত্তা পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রস্তাব পাস হতে হলে কমপক্ষে নয়টি ভোটের প্রয়োজন হয়। সেই সঙ্গে পাঁচ স্থায়ী সদস্য– যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের ভিটো দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়, “গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং তাতে বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে– এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে এবং অবিলম্বে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধের আহ্বান জানানো হচ্ছে। তাছাড়া গাজার জনসংখ্যাগত বা ভৌগোলিক পরিবর্তনের যে কোনো চেষ্টার বিরোধিতা আবারও নিশ্চিত করা হচ্ছে।”

এতে আরও বলা হয়, “খাদ্য সংকট পর্যবেক্ষণকারী বৈশ্বিক শীর্ষ সংস্থার গত মাসের এক প্রতিবেদনের পর গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে গাজা শহরে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার ওপর নিষেধাজ্ঞা না উঠলে তা পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্য দেশের তরফে কথা বলার সময় ডেনমার্ক বলেছে, গাজায় মানবিক সংকট মোকাবেলায় পরিষদের যে দায়িত্ব রয়েছে তা মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রস্তাবটি।

“এটি একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়। বার্তাটি হচ্ছে, নিরাপত্তা পরিষদ ক্ষুধার্ত বেসামরিক মানুষ, জিম্মি এবং যুদ্ধবিরতির দাবি উপেক্ষা করছে না,” বলেন জাতিসংঘে ডেনমার্কের দূত ক্রিস্টিনা মার্কাস লাসেন।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এর বিরোধিতা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্সেলর মর্গান অরটাগাস বলেন, এই প্রস্তাব একটি ‘ব্যর্থ ব্যবস্থাকে’ ফের চালু করার ঝুঁকি তৈরি করে, যা সাধারণ মানুষের দুর্দশার বিনিময়ে হামাসকে আরও সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ দেয়।

“গাজায় মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে হামাসের কারণে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের দেওয়া কোটি কোটি ডলারের সহায়তার প্রকৃত ব্যবহার নিয়ে উদাসীনতা দেখানোর কারণে।”

ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি ড্যানন প্রস্তাবটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “এই প্রস্তাব জিম্মিদের মুক্ত করবে না এবং এ অঞ্চলে নিরাপত্তা আনবে না।”

ন্যাশনাল লিখেছে, এ বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় বসার পর নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে দ্বিতীয়বার ভিটো দিল ওয়াশিংটন। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের সময় থেকে ধরলে ষষ্ঠবার ভিটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

Link copied!