আগস্ট ২৩, ২০২৩, ০৮:৩৪ পিএম
নিজেদের পাঁচ নাগরিকের মুক্তির ব্যাপারে ইরানের সাথে বন্দিবিনিময় চুক্তির প্রক্রিয়া সঠিক পথে চলছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সুলিভান বলেন, “ আমরা বিশ্বাস করি ইরানের সাথে এ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে প্রক্রিয়া অনুযায়ি সব এগোচ্ছে।”
হোয়াইট হাউসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “ আমি আপনাদের এই মুহুর্তে কোনো নির্দিষ্ট সময় দিতে পারছি না। তবে আমরা বিশ্বাস করি, সবকিছুই ট্র্যাকে রয়েছে।”
এর আগে, চলতি মাসের প্রথম দিকে একাধিক মার্কিন গণমাধ্যমসহ রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় দক্ষিণ কোরিয়ায় আটকে থাকা ৬০০ কোটি ডলার হাতে পাওয়ার বিনিময়ে পাঁচ নাগরিককে মুক্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান সরকার কাজ করছে। ওই চুক্তিটি এখনও না হলেও মুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন বন্দিদের কারাগার থেকে গৃহবন্দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তেহরানের এই প্রকিয়াকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তবে পাঁচজন তখনো বাড়িতে না পৌঁছানোয় উদ্বেগ জানান তিনি।
গৃহবন্দি মার্কিন নাগরিকেরা হলেন- ইরানিয়ান-আমেরিকান ব্যবসায়ী সিয়ামাক নামাজি (৫১), এমাদ সারজি (৫৮), পরিবেশবিদ মোরাদ তাহবাজ (৬৭) একাধারে তিনি ব্রিটিশ নাগরিকও। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম মার্কিন নাগরিকের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের খান্নানি সোমবার বলেন, ‘বন্দিবিনিময়ের প্রক্রিয়ার কোনো সময় নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সব কিছু মিলিয়ে দুই মাস সময় লাগতে পারে।’
এদিকে, সময় লাগলেও দুই দেশের বন্দিবিনিময়ের প্রক্রিয়াধীন চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেনবিশ্লেষকরা। তা্রপরও ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্কের উন্নতি কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে অভিমত তাদের।
এদিকে ইরানের কাছে পাঠাতে ৬০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ সুইস ব্যাংকে হস্তান্তর করা হয়েছে। মুদ্রা বাজারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম ইওনহ্যাপ ইনফোম্যাক্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ৬০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ দক্ষিণ কোরিয়া মুদ্রা ওনকে সুইস ব্যাংক ডলারে পরিণত করবে। পরে ওই অর্থ ইউরোতে রূপান্তর করা হবে।
প্রসঙ্গত বন্দী আমেরিকানদের সবাই ইরানি বংশোদ্ভূত। এদেরকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরানের কারাগার থেকে পাঁচ আমেরিকানকে মুক্তি দেয়া একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তিনি আশা করেন তারা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দক্ষিণ কোরিয়ায় পেট্রোলিয়াম বিক্রি করে ইরান। তবে প্রাপ্য অর্থ দক্ষিণ কোরিয়ায় জব্দ করে ট্রাম্প প্রশাসন। ওই অর্থ ছাড় পেতে ওয়াশিংটনকে আহ্বান জানিয়ে আসছিল তেহরান।