ছবি: সংগৃহীত
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অন্যতম যাত্রী সুইডিশ মানবাধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে গ্রিসে পাঠাবে ইসরায়েল। ফ্লোটিলা থেকে গ্রেটাকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আটক করেছিল।
সোমবার, ০৬ অক্টোবর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার আয়োজক সংস্থার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট।
ফ্লোটিলার এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া পোস্টে জানানো হয়, আজ সোমবার গ্রেটাকে গ্রিসে পাঠানো হচ্ছে।
‘গ্রেটা থুনবার্গকে আগামীকাল মুক্তি দেওয়া হবে। তিনি গ্রিসে এসে পৌঁছাবেন,’ পোস্টে বলা যায়।
ওয়াইনেট জানিয়েছে, গ্রিস সরকার ওই ফ্লাইটের খরচ বহন করবে। গ্রেটার সঙ্গে আরও ২৭ গ্রিক মানবাধিকারকর্মীও দেশে ফিরবেন। সোমবার ২৮ ফরাসি, ১৫ ইতালিয় ও নয় জন সুইডিশ নাগরিকও নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।
গ্রিক পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের দেশের মানবাধিকারকর্মীদের ফেরত আনার ফ্লাইটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে গ্রিসের বিবৃতিতে গ্রেটার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
ফ্লোটিলা থেকে আটকের পর গ্রেটার ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ এসেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
ইসরায়েলের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ফেরার পর এ অভিযোগ করেন ওই নৌবহরে অংশ নেওয়া কয়েকজন আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মী।
বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে গত শনিবার ইস্তাম্বুলে ফেরেন তুরস্কের সাংবাদিক এরসিন সেলিক।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া সেলিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেটা থুনবার্গকে নির্যাতন করেছে, মাটির ওপর দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেছে এবং ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করেছে।’
তিনি স্বচক্ষে এসব নির্যাতন দেখেছেন বলে জানান।
ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে একই কথা বলেন মালয়েশিয়ার অধিকারকর্মী হাজওয়ানি হেলমি ও যুক্তরাষ্ট্রের উইন্ডফিল্ড বিবার। তারা জানান, ‘থুনবার্গকে ধাক্কা দিয়ে তার গায়ে জোর করে ইসরায়েলি পতাকা মুড়িয়ে দেওয়া হয়।’
সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা জানায়, এ ধরনের কোনো দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন নিয়ে গ্রেটা ‘ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।’
সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক ইমেইলে জানিয়েছে, তাদের এক কর্মকর্তা গ্রেটার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি ওই কর্মকর্তাকে জানান, তাকে বিছানায় ছারপোকার কামড় সহ্য করতে হচ্ছে। পাশাপাশি, তাকে খুবই সামান্য খাবার ও পানি দেওয়া হয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান ওই ইমেইলটি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, ‘(সুইডিশ) দূতাবাস গ্রেটার সঙ্গে দেখা করতে পেরেছে। তিনি পানিশুন্যতায় ভোগার অভিযোগ করেছেন। তাকে অপর্যাপ্ত খাবার ও পানি দেওয়া হয়েছে। ছারপোকার কামড়ে তার সারা শরীরে ঘা হয়ে গেছে। তিনি দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন এবং অমসৃণ ও কঠিন জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছে।’
তবে এখন পর্যন্ত এসব বিষয়ে গ্রেটা নিজে কোনো বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানা যায়নি। হয়তো গ্রিসে ফিরেই তিনি এ বিষয়ে মুখ খুলবেন।