পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগে শুরু থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব রয়েছেন।
“এই একটা ঘটনা নয়। এমন আরও অনেক ঘটনা আছে। আমি অনেকদিন ধরেই জানি। মহামান্য, তাই কিছু বলতে পারছি না। শোভনীয় নয়। তবে তোমার মত লোকের কাছে এখন নারীরা যেতে ভয় পাচ্ছে। আমাকেও যদি তুমি কথা বলতে ডাকো, আমিও আর রাজভবনে যাবো না”
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
এর আগে শ্লীলতাহানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে রাজ্যপাল রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ ইচ্ছুক রাজ্যবাসীকে দেখানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মমতা ও তার পুলিশকে না দেখানোর শর্তও দিয়ে রাখেন। সেই অনুযায়ী কলকাতার সাংবাদিক ও ইচ্ছুক রাজ্যবাসী মিলিয়ে ১০০ জনকে সেই ফুটেজ দেখানো হয়। তবে এতে অশালীন কিছুই পাওয়া যায়নি। তারপরও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে জোর সমালোচনা করে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যপালের ফুটেজ দেখানোর সমালোচনা করে শনিবার (১১ মে) পশ্চিমবঙ্গের হুগলি ও হাওড়ার দুটি নির্বাচনী প্রচারণায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “দরকারে ফুটপাতে কথা বলবো, তবু আর রাজভবনে যাবো না।”
রাজভবনের পক্ষ থেকে সেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রেসকে ডেকেছিল। এডিট করে কিছু ভিডিও দেখিয়েছে। পুরোটা দেখিয়েছে কি? আমার কাছে কপি আছে। যেটা এডিট করেছে সেটাও আছে।”
একটা নয়, তুমি অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছো উল্লেখ করে এবং রাজ্যপাল আনন্দ বোসের পদত্যাগ দাবি করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “এই একটা ঘটনা নয়। এমন আরও অনেক ঘটনা আছে। আমি অনেকদিন ধরেই জানি। মহামান্য, তাই কিছু বলতে পারছি না। শোভনীয় নয়। তবে তোমার মত লোকের কাছে এখন নারীরা যেতে ভয় পাচ্ছে। আমাকেও যদি তুমি কথা বলতে ডাকো, আমিও আর রাজভবনে যাবো না।”
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
২ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন এক নারী। নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী বলে দাবি করা ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ দায়েরের পর ৩ মে থেকে অভিযোগের বিষয়ে সমালোচনা করে যাচ্ছেন মমতা।
নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী বলে দাবি করেছেন তিনি। এরপরই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল এক বিবৃতিতে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজভবন চত্বরে কোনোভাবেই পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ প্রবেশ করতে পারবে না। একই সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও রাজভবনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রাজ্যপাল জানান, “সত্যের জয় হবেই। কোনো কৌশলের সামনে আমি মাথা নত করবো না। বাংলার দুর্নীতি ও হিংসার বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামাতে পারবে না।”