প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে ফের যুদ্ধ মন্ত্রণালয় করছেন ট্রাম্প

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে ফের যুদ্ধ মন্ত্রণালয় করছেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যেন যুদ্ধ মন্ত্রণালয় নাম ফিরে পায়, তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যেন ‘যুদ্ধ মন্ত্রণালয়’ নামটিকে বিকল্প নাম হিসেবে ব্যবহার করে এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে যুদ্ধমন্ত্রী বলা যায়, তার জন্য শুক্রবার তিনি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে সংক্ষেপে পেন্টাগন ডাকা হয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর তদারককারী মন্ত্রণালয়। ১৭৮৯ সালে মন্ত্রণালয় হওয়ার পর ১৯৪৯ পর্যন্ত এটি যুদ্ধ মন্ত্রণালয় নামেই পরিচিত ছিল।

নতুন নির্বাহী বিভাগ বা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, কিংবা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলের দায়িত্ব মার্কিন কংগ্রেসের হাতে রয়েছে। সে জন্যই প্রাথমিকভাবে ‘যুদ্ধ মন্ত্রণালয়’ নামটি ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের’ বিকল্প নাম হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন ট্রাম্প।

শুক্রবার ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারি হলে হেগসেথ এবং তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নথি বা তাদের পরিচিতিতে কোথাও কোথাও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জায়গায় যুদ্ধ মন্ত্রণালয় লিখতে পারবেন।

যুদ্ধ মন্ত্রণালয় নামটিই যেন স্থায়ী হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং কী কী আইনি ও নির্বাহী পদক্ষেপ লাগবে তা জানাতে হেগসেথকে নির্দেশনাও দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

যুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জর্জ ওয়াশিংটনের হাত ধরে, কিন্তু পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটির নাম বদলে যায়। ‘পারমাণবিক যুগে’ যুদ্ধ ঠেকানোই যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারে থাকবে এই বিবেচনায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর দেখভালের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের নাম ‘প্রতিরক্ষা’ করেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এখন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র কেবল প্রতিরক্ষা নয়, দেশের স্বার্থে প্রয়োজনে আক্রমণে যেতেও দ্বিধা করবে না। এ কারণে আগের যুদ্ধ মন্ত্রণালয় নামটিই যথাযথ। এটি একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ে কাজ করা কর্মকর্তাদের মনোযোগেও বদল আনবে।

স্থায়ীভাবে নাম বদলে কী পরিমাণ খরচ হবে তা জানায়নি হোয়াইট হাউস।

তবে এ পুরো কর্মযজ্ঞে কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে বলে অনুমান মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর। নাম বদলের সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্যাড, লগো থেকে শুরু করে ইমেইল ঠিকানা, ইউনিফর্মসহ আরও অনেক কিছুই বদলানো লাগবে।

পেন্টাগন এখন ব্যয় ও অপচয় কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নাম বদল ওই চেষ্টাতেও ব্যাঘাত ঘটাবে।

ট্রাম্প এর আগে বারবারই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আগের নামে ফেরানোর আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন।

দুটি বিশ্বযুদ্ধেই যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের নামেই অভূতপূর্ব জয় পেয়েছে, বলেছিলেন রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট।

মন্ত্রণালয়ের নাম স্থায়ীভাবে বদলে কংগ্রেস সদস্যরা আপত্তি করবে না বলেও তার আশা।

এদিকে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছেন, নোবেল পুরস্কারের ব্যাপারে তার তেমন আগ্রহ নেই।

“আমি যেটা করতে পারি তা হলো যুদ্ধ থামানো। আমি মনোযোগ চাইছি না, কেবল প্রাণ বাঁচাতে চাইছি,” সিবিএস নিউজকে এমনটাই বলেছেন তিনি।

মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষ, সেনেট ও প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম স্থায়ীভাবে বদলে ট্রাম্পকে তেমন বেগ পেতে হবে না বলেই মনে করছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বুধবার তিয়েনআনমেন স্কয়ারে বিশাল কুচকাওয়াজে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম দেখিয়ে চীন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের এক ধরনের বার্তা দিয়েছে বলেই অনুমান অনেকের। এর দুইদিনের মাথায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলের আদেশে ট্রাম্পও হয়তো জবাব দিতে চাইছেন, বলছেন তারা।

Link copied!