ওমিক্রন ঠেকাতে ফ্রান্সে কঠোর বিধিনিষেধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৮, ২০২১, ০৪:৫৬ পিএম

ওমিক্রন ঠেকাতে ফ্রান্সে কঠোর বিধিনিষেধ

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ওমিক্রনের কারণে বিভিন্ন দেশে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশে নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন জারি করেছে।  ইউরোপের দেশ ফ্রান্সেও কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসির খবরে বলা হয়, আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে ফ্রান্সে নতুন বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। যাদের পক্ষে সম্ভব তাদের বাড়িতে বসেই কাজ করতে হবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ যে কোনো অনুষ্ঠানে দুই হাজার মানুষ একত্রিত হতে পারবেন। এর বেশি মানুষ কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে।

তবে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে নববর্ষের আগের দিন কারফিউ কার্যকর থাকবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্স। তিনি বলেন, এই মহামারিকে মনে হচ্ছে সমাপ্তি ছাড়া কোনো একটি সিনেমা। স্থানীয় সময় সোমবার(২৭ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নতুন বিধিনিষেধ সম্পর্কে ঘোষণা দেন।

ইউরোপের দেশগুলোতে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ এখ লাখ ছাড়ানোর পর পাশের দেশ ফ্রান্সেও সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) গত ২৪ ঘন্টায় এক লাখের বেশি  লোক করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ডয়েচে ভেলের খবরে আরও বলা হয়,  সোমবার দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাখ চার হাজার ৬১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা তিন দিন দৈনিক সংক্রমণে রেকর্ড করে ফ্রান্স।

ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্সের ঘোষণা অনুযায়ি, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নাইটক্লাব বন্ধ থাকবে। অপরদিকে ক্যাফে এবং বারে শুধু টেবিল সার্ভিস দেওয়া যাবে। শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।এছাড়া, ঘরের বাইরে জনসমাগমের ক্ষেত্রে নতুন বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্সে। ছবি: সংগৃহীত

দেশটিতে ইতোমধ্যে পূর্ণবয়স্কদের বুস্টার টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সরকার থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে ‘ভ্যাকসিন পাস’-এর। শুধুমাত্র টিকার দুইডোজ সম্পন্নকারীরাই এই পাস পাচ্ছেন।পাশাপাশি দেশটির রেস্তোরাঁ, ক্যাফে বা বিদেশ ভ্রমণের জন্য এই পাস থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দুটি টিকা নেওয়া না থাকলে বহু জায়গাতেই প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।দেশটিতে সোমবার ১ হাজার ৬শর বেশি করোনা রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যা নতুন রেকর্ড। জার্মানি এবং গ্রিসেও নতুন করে বিধিনিষেধ জারি হয়েছে।

 

তবে দেশটিতে পুরোপুরি লকডাউন জারির বিষয়ে একমত নন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী।  বিভিন্ন স্কুল খোলা রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই ফ্রান্সে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি পুরো পাল্টে যায়। গত ৪ ডিসেম্বর এক লাফে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ি, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ মারা গেছেন। আর করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫১ জন।

Link copied!