এবারের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন নন্দীগ্রাম। এই আসনের ভোটের ফলাফল নিয়ে চরম নাটকীয়তা চলছে। একবার জানা যাচ্ছে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি এগিয়ে রয়েছেন, তো আরেকবার জানা যাচ্ছে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী জিতেছেন। তবে যেই জিতুক এখন প্রশ্ন, নন্দীগ্রামে হেরে গেলে মমতা কি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন?
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, নন্দীগ্রামে ১ হাজার ৬২২ ভোটে জিতে গেছেন বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও পোস্টাল ব্যালট ছাড়া মমতার সঙ্গে শুভেন্দুর জয়ের ব্যবধান ৯ হাজার ৭৮৭ ভোটের। তারপরও সংবাদ সম্মেলনে নন্দীগ্রামে হেরে গেছেন জানিয়ে মমতা বলেছেন, ‘নন্দীগ্রাম যা রায় দেবে, মাথা পেতে নেব।’
আনন্দবাজার পত্রিকার হিসাবে, ক্ষমতাসীন তৃণমূল বর্তমানে ২১১ আসনে এগিয়ে রয়েছে। আর বিজেপি এগিয়ে আছে ৮০ আসনে। তবে বিজেপির জন্য একমাত্র স্বস্তির খবর, নন্দীগ্রামে জিতেছেন শুভেন্দু।
ভারতের সংবিধানের ১৬৩ ও ১৬৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশটিতে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হতে হলে বিধানসভার সদস্য হতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবেন রাজ্যের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতারাই।
এতে আরও বলা রয়েছে, টানা ছয় মাস মন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হলে তাকে রাজ্যের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। তা না হলে ১৮০ দিন পর তার পদ বাতিল হয়ে যাবে।
সংবিধানের এসব ধারা অনুযায়ী, তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতা ধরে রেখে মমতা যদি নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কাছে হেরে যান, তাহলে অন্য কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে ৬ মাস সময় পাবেন তিনি। সেক্ষেত্রে দলের কোনো এক সদস্যকে পদত্যাগ করে তার আসনটি শূন্য করে দিতে হবে। আর সেখান থেকেই নির্বাচন করে রাজ্যের ২৯৪ আসনের বিধানসভার আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হবেন মমতা।
এদিকে নন্দীগ্রামে ফলাফল নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ রয়েছে, রায় ঘোষণার পর কারচুপি হয়েছে।’
এর আগে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছিল, ১ হাজার ২০২ ভোটে নন্দীগ্রামে মমতা জয়ী হয়েছেন। সার্ভারের ত্রুটির কারণে দুপুরে এমনিতেই ৪০ মিনিট ভোট গণনা বন্ধ ছিল। তারপর মমতার জয়ের খবর সামনে আসার পরও কোন তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি কমিশন। এর পরই জানা যায়, বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু জয়ী হয়েছেন।