বিশ্ববাজারে পাম তেলের দাম এক সপ্তাহে কমল ১৬ শতাংশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্চ ২০, ২০২২, ০৫:৫২ পিএম

বিশ্ববাজারে পাম তেলের দাম এক সপ্তাহে কমল ১৬ শতাংশ

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রুত বাড়তে থাকে পাম তেলের দাম। যদিও এই তেলের দুই শীর্ষ রপ্তানিকারক ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনের সূর্যমুখী তেল বাজারে না আসায় ইউরোপীয়দের চাহিদায় এবং ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিতে বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে পাম তেলের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া তাদের রপ্তানি বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়ায় আবারও পড়তে শুরু করেছে এ তেলের দাম।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস জানায়, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে অগ্রিম বাজারে মালয়েশিয়ান পাম তেলের দাম কমে এক মাসে সর্বনিম্ন হয়েছে। প্রতি টনের দাম দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৭০০ রিংগিত। সামনে দাম আরো কমবে। গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে এক দিনে পাম তেলের দাম কমেছে ৫.১৭ শতাংশ আর গত এক সপ্তাহে কমেছে ১৬.০৭ শতাংশ।

ইন্দোনেশিয়ায় কম্পানিগুলোর পাম তেল রপ্তানির ৩০ শতাংশ দেশের বাজারে বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন সেই শর্ত তুলে দিয়ে রপ্তানি কর বাড়িয়ে দিয়েছে দেশটির সরকার। এতে দাম পড়ছে। এ ছাড়া চীনে নতুন করে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ায় দেশটিতে চাহিদা কমার আশঙ্কা করছে মালয়েশিয়ান পাম ওয়েল বোর্ড। এতে আগে থেকেই নিম্নমুখী প্রবণতায় এ তেলের দাম।

এদিকে বাজারের অন্যতম শীর্ষ বিশ্লেষক দোরাব মিস্ত্রি জানান, পাম তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম এ বছরের দ্বিতীয় ভাগে কমে আসবে। বিশ্বজুড়ে নিম্ন প্রবৃদ্ধি এবং মন্দার কারণে পণ্যের চাহিদা কমে আসবে, সে কারণেই কমবে দাম। তিনি বলেন, অপরিশোধিত পাম তেলের দাম দ্রুতই প্রতি টন পাঁচ হাজার রিংগিতে (এক হাজার ১৯৬ ডলার) নেমে আসবে। এমনকি সেপ্টেম্বর নাগাদ দাম চার হাজার রিংগিতে আসবে। মিস্ত্রি ভারতীয় ভোক্তা পণ্য কম্পানি গোদরেজ ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক। সম্প্রতি কুয়ালালামপুরে এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি পূর্বাভাস দেন, ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার পাম তেল উৎপাদন বাড়বে ১৯ মিলিয়ন টন এবং ইন্দোনেশিয়ার বাড়বে কমপক্ষে দুই মিলিয়ন টন।

ভোজ্য তেলের মধ্যে পাম তেল তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় এশিয়ার দেশগুলোতে এ তেলের চাহিদা বেশি। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে এবার সেই চিত্র পাল্টে গেছে। সয়াবিনসহ চার প্রধান ভোজ্য তেলের মধ্যে সম্প্রতি সর্বোচ্চ দাম উঠেছে পাম তেলের। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে সূর্যমুখী তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় এশিয়ার পাশাপাশি ইউরোপের ক্রেতারাও বিকল্প হিসেবে পাম তেল আমদানি বাড়িয়েছেন।

জানা যায়, দেশে মোট পাম তেল আমদানির ৮৫ শতাংশের বেশি আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে; বাকিটা মালয়েশিয়া থেকে। আগে সবচেয়ে বেশি মালয়েশিয়া থেকে এলেও কয়েক বছর ধরে ইন্দোনেশিয়ার দিকে ঝুঁকেছেন ভোজ্য তেল পরিশোধন ব্যবসায়ীরা।

Link copied!