জুলাই ১৯, ২০২৩, ০১:৩৮ এএম
দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে চলমান থাকার পর অবশেষে মঙ্গলবার ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালো ‘ইন্ডিয়া’(ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স)। তবে বদলায়নি তার ‘লক্ষ্য’। ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটের পরে কংগ্রেস নেতৃত্বে জাতীয় স্তরে যে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরি হয়েছিল, মঙ্গলবার ভারতের কর্ণাটক প্রদেশের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে তার কার্যত অবলুপ্তি ঘটল। নতুন অস্ত্রের নাম উঠে আসলো‘ইন্ডিয়া’। এই নাম বাছাইয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিরোধী শিবির সূত্রের খবর।
আনন্দবাজারসহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বেঙ্গালুরু বৈঠকে উপস্থিত থাকা তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সোমবার রাতে সোনিয়া গান্ধীর নৈশভোজের আগেই বৈঠকে কার্যত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল নতুন জোটের নাম।’’ তিনি জানান, ওই বৈঠকে প্রথম বক্তা ছিলেন মমতা। শেষ বক্তা রাহুল। তৃণমূল নেত্রী তাঁর বক্তৃতায় বিরোধী জোটের নাম ‘ইন্ডিয়া’ প্রস্তাব করেন। এর পর অরবিন্দ কেজরীওয়াল, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরে, মেহবুবা মুফতিরা সমর্থন করেন মমতার প্রস্তাব। শেষ বক্তা রাহুল জানান, তৃণমূলনেত্রী যে নাম প্রস্তাব করেছেন তাতে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিরোধী জোটের নাম দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা ছিল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
মঙ্গলবার কংগ্রেস তৃণমূল, ডিএমকে, আম আদমি পার্টি (আপ), জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডিইউ, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম), এনসিপি (শরদ), শিবসেনা (উদ্ধব), সমাজবাদী পার্টি, রাষ্ট্রীয় লোকদল, আপনা দল (কামেরাওয়াদি), ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপি, সিপিএম, সিপিআই, সিপিআই (এমএল) লিবারেশন, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, এমডিএমকে, ভিসিকে, কেডিএমকে, এমএমকে, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ, কেরল কংগ্রেস (মণি) এবং কেরল কংগ্রেস (জোসেফ) এর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৩ জুন পটনায় বিরোধী জোটের প্রথম বৈঠক হয়েছিল। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে হল দ্বিতীয় বৈঠক। সাংবাদিক বৈঠকের প্রথম বক্তা, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে জানিয়েছেন পরবর্তী বৈঠক হবে মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বইয়ে। অর্থাৎ এই প্রথম বিজেপি জোট শাসিত কোনও রাজ্যে বিরোধীদের বৈঠক হবে। ঘটনাচক্রে ওই রাজ্যেই উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা এবং শরদের এনসিপি-কে ভেঙে এনডিএ-র কলেবর বৃদ্ধি করেছে বিজেপি।
নাম বদল হলেও নয়া জোটের চেয়ারপার্সন বা আহ্বায়ক পদ আপাতত ঘোষণা করা হয়নি বেঙ্গালুরুতে। মুম্বইয়ের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে বিরোধী জোটের তরফে ইঙ্গিত মিলেছে।আগামী সাধারণ নির্বাচনে এই মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’ মোদীযুগের অবসান ঘটাতে পারবে কিনা তাই এখন দেখার বিষয়।